কৃষি ডেস্ক: দেশে প্রতি বছর সংগ্রহোত্তর পর্যায়ে সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে ফসলভেদে ২৫ থেকে ৪১ শতাংশ নষ্ট হচ্ছে। সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই ক্ষতি কমানোর লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, দেশে প্রায় ৩ কোটি ২১ লাখ বসতবাড়ির অধিকাংশ বাড়িতে অবহেলা ও অযত্নে ফল গাছ জন্মে থাকে। এগুলোর বেশির ভাগই স্থানীয় অনুন্নত জাত এবং বীজ থেকে উৎপন্ন বিধায় এদের ফলন অত্যন্ত কম। এখানেও উন্নত জাতের ফলের চাষ সম্প্রসারণে কাজ চলছে ।
গত সোমবার (১২ জুন) সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় ফল মেলা-২০২২ উপলক্ষ্যে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলামসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ফল উৎপাদনে বিশ্বে সফলতার উদাহরণ হয়ে উঠেছে। এ মুহূর্তে বিশ্বে ফলের উৎপাদন বৃদ্ধির সর্বোচ্চ হারের রেকর্ড বাংলাদেশের, বছরে সাড়ে ১১ শতাংশ হারে ফল উৎপাদন বাড়ছে। নিত্যনতুন ফল চাষের দিক থেকেও বাংলাদেশ সফলতা পেয়েছে। তিনি বলেন, ২০ বছর আগে আম আর কাঁঠাল ছিল এই দেশের প্রধানফল। আর এখন বাংলাদেশে ৭২ প্রজাতির ফলের চাষ হচ্ছে। ড. রাজ্জাক বলেন, ২০০৮-০৯ সালে দেশে ফলের উৎপাদন ছিল প্রায় ১ কোটি টন। আর বর্তমানে ফলের উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ১ কোটি ২২ লাখ টন। বিগত ১২ বছরে ফলের উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি ২২ শতাংশ।
তবে দেশীয় ফল উৎপাদনে প্রত্যাশিত অগ্রগতি হলেও এখনো বিদেশি ফলের আমদানি করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশে মোট আমদানি ফলের প্রায় ৮৫ শতাংশই আপেল, কমলা, মাল্টা ও আঙুরের দখলে। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ চত্বরে ১৬ জুন থেকে তিন দিনব্যাপী জাতীয় ফল মেলা শুরু হয়েছে। মেলা চলবে ১৮ তারিখ পর্যন্ত। এবারের প্রতিপাদ্য ‘বছরব্যাপী ফল চাষে, অর্থ পুষ্টি দুই-ই আসে’। মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা ফল চাষের বিভিন্ন প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে এবং রাসায়নিকমুক্ত বিভিন্ন জাতের ফল ক্রয় করতে পারবেন। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নেবে।