সম্মানজনক কর্মসংস্থান হলো
আশেকে রাসুল গোলাম সারোয়ার, বরিশাল জেলায় তার বাড়ি। ঢাকায় একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। ২০০৬ সালের ঘটনা, তিনি তখন সদ্য বিবাহিত, নতুন সংসার। ব্যাংকের চাকরি নিয়ে একটু অশান্তিতে ছিলেন, কোনো ছুটি নেই, অফিসের সময়সূচি নেই, প্রমোশন নেই। কিছু অফিসার তাকে প্রচণ্ড মানসিক কষ্ট দিত। তিনি তখন ব্যাংক পরিবর্তনের জন্য অন্য ব্যাংকে পরীক্ষা দিয়ে এবং অনেক চেষ্টা করে কোনো ফল পাচ্ছিলেন না। একটু শান্তিতে চলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছিলেন। ২০০৬ সালের জুলাই মাসে তিনি অন্য একটা ব্যাংকে পরীক্ষা দিয়ে আবারও উত্তীর্ণ হন। কিন্তু কোনো নিয়োগপত্র পাননি, অপেক্ষা করেও প্রায় দুমাস পার হয়ে যায়। একদিন গোলাম সারোয়ার হঠাৎ ‘বস’-এর সাথে রাগ করে চাকরি থেকে রিজাইন দিয়ে দেন, মাথা গরম ছিল কিন্তু পরদিন অফিসে গিয়ে দেখেন রিজাইন লেটার অনুমোদন হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় তিনি ভীষণ ভেঙ্গে পড়েন, বাড়িতে নতুন বউ, শশুরবাড়ির লোকজন কেউ জানে না যে, জামাই বেকার হয়ে পড়েছে। তিনি মনের দুঃখে সবাইকে ছুটির কথা বলে দেশের বাড়ি বরিশাল চলে যান। অনেক কষ্টে প্রায় দুমাস অতিবাহিত হয়। বেকারত্বের যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে পড়েন। লজ্জায় তার স্ত্রী বলে যে, সে আত্মহত্যা করবে। গোলাম সারোয়ার ও তার স্ত্রী কেঁদে কেঁদে দিন কাটাচ্ছেন। তিনি তখন দরবারে নতুন সবক নিয়েছেন মাত্র। তার মনে পড়ে যায়, তার মহান মুর্শেদ যুগের ইমাম, মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজানের কথা। আশেকে রাসুল গোলাম সারোয়ার দয়াল বাবাজানের শরণাপন্ন হলে তিনি সব শুনে বললেন, “এ মিয়া! এতো হতাশ হচ্ছেন কেন? আল্লাহর উপর ভরসা রাখেন। তিনিই রিজিকের ব্যবস্থা করবেন।” অতঃপর গোলাম সারোয়ার মোর্শেদ কেবলাজানের পরামর্শক্রমে নতুন উদ্যমে তরিকার আমল শুরু করেন এবং আল্লাহর সাহায্য লাভেল আশায় একটি মানত করেন। দুদিন পর সেপ্টেম্বর মাসের ২৯ তারিখ রাতে স্বপ্নে দেখেন যে, দয়াল বাবাজান বরিশালে তাদের বাসায় হাজির হয়ে তাকে একটি টাই হাতে দিয়ে বলছেন, “কি সারোয়ার মিয়া! অফিসে যাবেন না? দেরি হয়ে যাবে তো।” বাবাজান অনেকক্ষণ তাদের বাসার সোফার উপর বসেছিলেন এবং মুখে ছিল নয়ন জুড়ানো হাসি। তিনি বাবাজানের সামনে কাপড় পরে রেডি হয়ে টাই বেঁধে বাবাজানকে কদমবুসি করেন। তারপর আবেগে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। রাতে কাঁদতে কাঁদতে তার স্ত্রীকে বলেন যে, “দয়াল বাবাজান এসেছিলেন এবং আমার নতুন চাকরি হয়ে গেছে।” কিন্তু এ কথাটি তার স্ত্রী বিশ্বাস করতে পারেনি। সকাল ৯ টায় তার মোবাইলে নতুন ব্যাংক থেকে ফোন আসে যে, তার চাকরি হয়ে গেছে এবং আজকেই নিয়োগপত্র নিতে হবে। তিনি ঢাকায় রওনা হন এবং যোগাযোগ করে চাকরির নিয়োগপত্র গ্রহণ করেন এবং বিকেলে মিষ্টি নিয়ে বাবে রহমতে দয়াল বাবাজানের সাথে দেখা করে ঘটনাটি জানান। বাবাজান শুধুই মুচকি হাসি দিয়ে মন দিয়ে তরিকার আমল করতে বললেন।
ঘটনা এখানেই শেষ নয়, দয়াল বাবাজানের অসিলায় মহান আল্লাহর এতই দয়া ছিল যে, ৬ অক্টোবর তিনি নতুন ব্যাংকে প্রমোশনসহ কাজে যোগ দেন এবং সেই দিনই ব্যাংকের সবার বেতন প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে যায়। সবাই তাকে ‘লাকী পারসন’ বলে অভিবাদন জানায়। অতঃপর আল্লাহ্ ও তাঁর বন্ধুর দয়ায় আবার তিনি নতুন করে জীবন শুরু করেন।