‘আম্পান’ পরবর্তী উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসায় নেমেছে সশস্ত্র বাহিনী

0
364

অনলাইন ডেস্ক: সুপার সাইক্লোন ‘আম্পান’ পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবিলায় সার্বিক ত্রাণ, উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের দিক-নির্দেশনায় আগে থেকেই সেনাবাহিনী ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রম, ত্রাণ তৎপরতা ও চিকিৎসাসেবা প্রদানে যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। বর্তমানে তারা ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত এলাকাগুলোতে বেসামরিক প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরূপন করছে।

এরই মধ্যে দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য সেনাবাহিনীর ১৪৬টি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল স্বল্প সময়ে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। দুর্যোগ উপদ্রুত এলাকাগুলোতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের জন্য সেনাবাহিনীর ৭৬টি মেডিক্যাল টিমও প্রস্তুত। ঘূর্ণিঝড় কবলিত বিভিন্ন এলাকায় খাদ্যসহায়তা হিসেবে সেনাবাহিনীর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রস্তুত আছে ১২ হাজার ৫০০ প্যাকেট ত্রাণসামগ্রী। এছাড়া বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ১৬টি ওয়াটার পিউরিফিকেশন প্ল্যান্ট ও ১৪টি ওয়াটার বাউজারও প্রস্তুত। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান হয়।

বিমান বাহিনীর পরিবহন বিমান ও হেলিকপ্টারে করে জরুরী উদ্ধার ও ত্রান কার্যক্রম গ্রহন করা হয়েছে ।

এতে আরও জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা ভোলা ও হাতিয়ায় দূর্গত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা প্রদানের জন্য নৌবাহিনীর দু’টি জাহাজ চট্টগ্রাম নৌ জেটি ত্যাগ করেছে। অন্যদিকে খুলনা নৌঅঞ্চল থেকে সাতক্ষীরার গাবুরা ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজে সহায়তা জন্য ২২ সদস্যের একটি নৌবাহিনী কন্টিনজেন্ট এবং উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য ৭ সদস্যের একটি ডাইভিং টিম সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে।

বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাতের দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি সি-১৩০ পরিবহন বিমান, একটি এমআই-১৭এসএইচ হেলিকপ্টার, একটি অগাস্টা-১১৯ হেলিকপ্টার এবং একটি বেল-২১২ হেলিকপ্টার ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুতখুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, বরগুনা, নোয়াখালী, ঝালকাঠী, কুয়াকাটা ও সুন্দরবন এলাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনে দ্রুততার সঙ্গে পাঠানো হয়। পরিদর্শন শেষে ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুত এলাকার ক্ষয়ক্ষতির বাস্তবচিত্র যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হয়।

দেশের বিভিন্ন জনপদে জনগনের পাশে দাঁড়িয়েছে সশস্ত্র বাহিনী ।

এছাড়াও বিমান বাহিনীর ১১৯ সদস্যের (চার কর্মকর্তা, ৮১ বিমানসেনা ও ৩৪ অসামরিক সদস্য) একটি টিম আম্পান পরবর্তী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে বিমান বাহিনীর নিজস্ব পরিবহনে সাতক্ষীরায় গিয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় আম্পানে বাংলাদেশের ১১০০ কোটি টাকার ক্ষতি
ঘূর্ণিঝড় আম্পানে প্রাথমিক হিসেবে বাংলাদেশের ১১০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘প্রায় এক হাজার ১০০ কোটি টাকার প্রাথমিক হিসাব আমরা পেয়েছি। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও কৃষি মন্ত্রণালয় আমদের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব দিয়েছে। অন্য যারা আছেন তারা রিপোর্ট দিয়েছেন তারা তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ দেয়নি।’

ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ পরবর্তী সার্বিক বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বুধবার (২০ মে) বিকালে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পান পশ্চিমবঙ্গ উপকুলে আঘাত হানার পর স্থলভাগে উঠে আসে। সন্ধ্যারাত থেকে বাংলাদেশের উপক‚লেও শুরু হয় আম্পানের তাণ্ডব। এটি সারারাত এটি ঘূর্ণিঝড় রূপে থেকেই দেশের দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে তাণ্ডব চালিয়েছে। সারারাত তাণ্ডব চালানোর পর বৃহস্পতিবার (২১ মে) সকাল সাড়ে ৭টার পর শক্তি ক্ষয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়। ওই সময় স্থল নিম্নচাপ হিসেবে রাজশাহীতে অবস্থান করছিল আম্পান।

সকালেই মোংলা, পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here