উইঘুর মুসলিম নারীদের জোরপূর্বক বন্ধ্যা করছে চীন

0
159

দেওয়ানবাগ ডেস্ক: চীনের শিনজিয়াংয় প্রদেশের উইঘুর মুসলিমদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে দেশটির সরকার মুসলিম নারীদের দেহে জোর করে বন্ধ্যা করার কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। যদিও গত ২৯ জুন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ওই প্রতিবেদনকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।

মার্কিন সংবাদ সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এর ওই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি বিভিন্ন সরকারি পরিসংখ্যান, রাষ্ট্রীয় নথি, ডিটেনশন ক্যাম্পের ৩০ জন সাবেক বন্দি ও তাদের পরিবারের সদস্য এবং একজন সাবেক ক্যাম্প প্রশিক্ষকের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে করা হয়েছে।

এর আগেও বিভিন্ন সময়েই মুসলিম নারীরা জোরপূর্বক জন্ম নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন। শিনজিয়াংয়ের পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলে গত চার বছর ধরে পরিচালিত এই কর্মসূচিকে একাধিক বিশেষজ্ঞ জনতাত্ত্বিক গণহত্যা বলে অভিহিত করেছেন।

সাক্ষাৎকার ও প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, চীনের সরকার নির্ধারিত সংখ্যার চেয়ে বেশি সংখ্যায় সন্তান জন্ম দেওয়ায় উইঘুর ও অন্যান্য সংখ্যালঘু নারীদের ক্যাম্পে বন্দি করে রাখার হুমকি দিচ্ছে।

প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হচ্ছে, উইঘুর নারীদের জরায়ুতে আইইউডি প্রবেশ করানো হচ্ছে এবং প্রায় কয়েক হাজার নারীকে বন্ধ্যা করানোর উদ্দেশ্যে জোর করে সার্জারি করানো হয়েছে।

এপি’র অনুসন্ধানে দেখা গিয়েছে, তিন বা ততোধিক সন্তান জন্ম দেওয়ার শাস্তিস্বরূপ বিশাল অংকের জরিমানা করা হচ্ছে এবং সেটি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদেরকে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে আটকে রাখা হচ্ছে। এমনকী, লুকিয়ে রাখা বাচ্চাদের সন্ধানে গিয়ে পুলিশ তাদের বাবা-মা’কে আতঙ্কিত করতে তাদের বাড়ি-ঘরে হামলা পর্যন্ত করছে।

উল্লেখ্য, বিগত চারবছর যাবৎ উইঘুরদের বিরুদ্ধে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ছে চীন। ২০১৯ সালে বিবিসি’র এক তদন্তে উঠে আসে যে, শিনজিয়াংয়ের মুসলিম শিশুদের তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে যেন তারা মুসলিম সম্প্রদায়ের থেকে আলাদা হয়ে বড় হয়।

ধারণা করা হয় চীনে প্রায় ১০ লাখ উইঘুর ও অন্যান্য জাতির মুসলিম সংখ্যালঘুদের ‘নতুন করে শিক্ষা’ দেওয়ার উদ্দেশ্যে ক্যাম্পগুলোতে বন্দি করে রাখা হয়েছে। শুরুতে চীন এসব ক্যাম্পের অস্তিত্ব অস্বীকার করলেও পরে তারা দাবি করে যে সন্ত্রাসবাদ দমনের লক্ষ্যে এই ধরনের ক্যাম্প পরিচালনা করা অতি জরুরি পদক্ষেপ।

তদন্তে আরও বলা হয়, সামগ্রিকভাবে দেখলে মনে হয়, তিন বা তারচেয়ে বেশি সংখ্যক সন্তান আছে যেসব নারীর, তাদের ঢালাওভাবে বন্ধ্যা করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here