অনলাইন ডেস্ক: দক্ষিণ এশিয়ার বড় তিনটি দেশ বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে করোনা ভাইরাসের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হচ্ছে। বাংলাদেশ-পাকিস্তানে আগেই শুরু হয়েছিল এমন সংক্রমণ, নতুন করে শুরু হলো ভারতেও। এর ফলে এ দেশগুলোতে করোনা রোগী বাড়ছে। ইতোমধ্যে ভারতে করোনার আরও ভয়ংকর দিন আসছে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন বলেছেন, ভারতে করোনায় মৃত্যুর হার ৩.৩ শতাংশের আশপাশে। সুস্থ হয়ে ওঠার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯.৯ শতাংশ। করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১১ দিনে দ্বিগুণ হচ্ছে। আমরা সব থেকে খারাপ সময়ের জন্যও প্রস্তুত।
২৪ মার্চ লকডাউন ঘোষণা করা হয় ভারতে। টানা লকডাউনে থাকার পরও দেশটিতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। সংশ্লিষ্ট অনেকে বলছেন, ভারতে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়ে গেছে। এতে চিন্তিত ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর)। তারা এবার ৭৫টি জেলায় এ নিয়ে সমীক্ষা শুরু করছে।
আইসিএমআরের দাবি, সংক্রমণের হার এবং ধরন বুঝতে ঘন ঘন র্যাপিড টেস্ট করা হবে ওই সব জেলায়। যাদের শরীরে সংক্রমণের কোনো লক্ষণ নেই তাদেরও টেস্ট করা হবে। ওই ৭৫টি জেলা কোনো রেড, অরেঞ্জ বা গ্রিন জোনের ভিত্তিতে বাছা হবে না। সব রকম জোনই থাকবে। দেশের যেসব জেলার জনঘনত্ব বেশি এবং যাদের ওপর দিয়ে আন্তঃরাজ্য পরিবহন বেশি হয়, সেই জেলাগুলোকে বেছে নেয়া হবে টেস্টের জন্য।
এই বিষয়ে আইসিএমআরের এক কর্মকর্তা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ঠিক কত নমুনা সংগ্রহ করা হবে তা এখনও ঠিক হয়নি। তবে যদি সঠিক পরিমাণে নমুনা সংগ্রহ করা হয় তবে এই সমীক্ষা সত্যিই যুক্তিযুক্ত।
শুক্রবার করোনা প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব লভ আগারওয়াল সতর্ক করে বলেছেন, কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়ে গেলে ভাইরাস নিয়েই আমাদের বেঁচে থাকা শিখতে হবে।
পাকিস্তানে ১১ এপ্রিল থেকে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। বর্তমানে দেশটিতে সংক্রমণ বাড়লেও লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল করে অর্থনীতির চাকা সচল করা হচ্ছে। শনিবার বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও শিল্প-কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে লকডাউন প্রত্যাহারের অংশ হিসেবে এদিন রাজধানী ইসলামাবাদে দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুনরায় খুলতে শুরু করে। ব্যবসা-বাণিজ্য শুরুর প্রথম ধাপে রয়েছে তৈরি পোশাক, জুতার দোকান এবং ছোট ছোট মার্কেট চালু করা। তবে দেশটির সব শপিংমল বন্ধই থাকছে। দেশটির বিপুলসংখ্যক দরিদ্র জনগোষ্ঠী মানবেতর জীবনযাপন করছেন উল্লেখ করে লকডাউন শিথিলের ঘোষণা দেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান।
বাংলাদেশে ২৫ মার্চ প্রথমবারের মতো রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট (আইইডিসিআর) জানায়, সীমিত পরিসরে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হচ্ছে। এরপর ১৩ এপ্রিল স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক বলেন, আমাদের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হয়ে গেছে। এখন কেউ নিয়ম না মানলে বেশি সংক্রমিত হবে, সংক্রমণ আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে।