করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিশ্বের ৮১ শতাংশ কর্মজীবী: আইএলও

0
289

করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বিশ্বের ৮১ শতাংশ কর্মজীবী মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। কোডিভ-১৯ পরিস্থিতি ও কর্মসংস্থানে প্রভাব বিষয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটি উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে বর্তমান বিশ্বের ২৭০ কোটি কর্মজীবী মানুষ এই ভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের সংখ্যা আরো বেশি যা ৩৩০ কোটি হতে পারে। অর্থনীতির সব সেক্টর ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব অর্থনীতির এমন বিপর্যয় আর দেখা যায়নি। কোটি কোটি শ্রমজীবী এখন উপার্জনহীন হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা বড়ো ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সুরক্ষাসহ প্রণোদনা ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

আইএলওর বিশ্লেষণ অনুযায়ী বিশ্বে এখন প্রতি ৫ জনের চার জন শ্রমশক্তি কোনো না কোনোভাবে করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলো কী ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে বা নেবে এর ওপরেই শ্রমবাজারে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নির্ভর করছে।

প্রতিবেদনটির বিষয়ে আইএলও মহাপরিচালক গাই রাইডার উল্লেখ করেছেন, উন্নত ও উন্নয়নশীল সব দেশেই শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে। দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তা কার্যকর করতে পারলেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা যাবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্তিতিতে সারা বিশ্বে লকডাউনের কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কারখানা পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ রয়েছে। ফলে চলতি ২০২০ সালে দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) বিশ্বব্যাপী শ্রমশক্তির মোট কর্মঘণ্টার ৬ দশমিক ৭ শতাংশ কমে যাবে।

অর্থাৎ সাড়ে ১৯ কোটি পূর্ণকালীন শ্রমিকের কর্মঘণ্টার সমান কর্মঘণ্টা কমে যাবে। এর মধ্যে আরব বিশ্বে ৫০ লাখ পূর্ণকালীন শ্রমিকের কাজের সমান কর্মঘণ্টা নষ্ট হবে। ইউরোপে ১ কোটি ২০ লাখ এবং এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ১২৫ কোটি পূর্ণকালীন শ্রমিকের কাজের সমান কর্মঘণ্টা নষ্ট হবে।

উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশগুলোতেই কর্মঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে। আইএলও’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, হোটেল, মোটেল, খাবার ব্যবসা, উৎপাদন, খুচরা ব্যবসা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে। স্বাস্থ্য খাতে নিয়োজিতদের শ্রমঘণ্টা বাড়ছে কিন্তু তারাই বড়ো ঝুঁকিতে রয়েছে।

বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সারা বিশ্বে ২০০ কোটি মানুষ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত রয়েছে। এর বেশিরভাগ উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশে। করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় তারাই বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।

মোটাদাগে দেশগুলোর নীতি নির্ধারকদের চারটি বিষয়ে জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে আইএলও। এগুলো হলো, উদ্যোক্তাদের সহায়তা, অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের জন্য প্রণোদনার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। সেই সঙ্গে কর্মজীবীদের কর্মসংস্থানের সুরক্ষা এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি, উদ্যোক্তা এবং নিয়োগ দাতাদের সমন্বয়ে সামাজিক সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে আইএলও।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here