কোভিড-১৯, করোনা ও করুণাময়

3
534

ড. আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল
ল্যাটিন একবচন শব্দ ‘করোনাম’-এর বহুবচন হলো করোনা। ‘করোনাম’ থেকে এসেছে ইংরেজি ‘ক্রাউন’ যার বাংলা অর্থ ‘মুকুট’। ভাইরোলজিস্টগণ ইলেকট্রন অণুবীক্ষণযন্ত্রে কতিপয় ভাইরাসের এনভেলাপের উপর করোনা বা মুকুট সদৃশ্য গ্লাইকোপ্রোটিন-এর স্পাইক বা উপাঙ্গ দেখতে পান এবং এ সকল ভাইরাসগুলোকে করোনাভাইরেডিই শ্রেণীভুক্ত করেন। এই শ্রেণীর অন্তর্গত করোনাভাইরেনি উপশ্রেণীভুক্ত ভাইরাসসমূহকে আলফা, বিটা, গামা ও ডেল্টা- এই চারটি জেনাসে এবং এর মধ্যে বিটা জেনাসকে এ, বি, সি, ডি ও ই- এই পাঁচটি লাইনেজ-এ ভাগ করা হয়েছে। লাইনেজকে কখনো কখনো স্ট্রেইন হিসেবেও উল্লেখ করা হয়ে থাকে। এ যাবৎ আবিষ্কৃত ২৬টি করোনা ভাইরাসের মধ্যে মানবদেহে রোগ সংক্রমণ করতে পারে নবআবিস্কৃত সার্স-কভ-২ ভাইরাসটিসহ মোট ৭টি করোনা ভাইরাস। আবিষ্কৃত এই ভাইরাসগুলোকে সংক্ষেপে সাধারণত করোনা ভাইরাস নামে ডাকা হয়।

করোনাভাইরেডিই শ্রেণীভুক্ত প্রথম ভাইরাসটির কথা ১৯৩৭ সালে মোরগ-মুরগির শ্বাসকষ্টজনিত সংক্রামক রোগ থেকে জানা যায়। পরবর্তীতে ১৯৬৫ সালে টাইরেল এবং বাইনো মানবদেহের ট্রাকিয়া কোষ থেকে করোনাভাইরাস পৃথক করেন। পূর্বথেকেই আলফা গণের দুটি এবং বিটা- লাইনেজ-এর দুটিসহ মোট চারটি করোনা ভাইরাস ‘এন্ডেমিক’ আকারে ছিল। বিগত দুই দশকের মধ্যে পূর্বের চারটির তুলনায় অধিক সংক্রমণ ক্ষমতার অধিকারী হয়ে আরও তিনটি করোনাভাইরাস আবির্ভূত হয়। এ তিনটির মধ্যে একটি সিভিআর একিউট রেস্পিরেটরি সিনড্রোম করোনাভাইরাস (সার্স-কভ), ২০০২ সালের নভেম্বরে এশিয়া মহাদেশে আবির্ভূত হয়ে ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৬টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে ৮০০০ জনের বেশি মানুষকে আক্রান্ত করে এবং ৭৭৪ জনের মৃত্যু ঘটায়। মৃত্যুর হার ছিল শতকরা ১০ শতাংশের অধিক। অন্যদিকে, মিডিলিস্ট রেসপিরেটরী করোনাভাইরাস (মার্স-কভ) ২০১২ সালে সৌদি আরবে আবির্ভূত হয়ে মধ্যপ্রাচ্যের আটটি দেশসহ পৃথিবীর সাতাশটি দেশে ছড়িয়ে পড়ে; এতে আক্রান্ত হয় ২৪৯৪ জন এবং পরলোকগমন করেন ৯১২ জন মানুষ। মৃত্যুর হার ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত। ২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় দেখা গেছে; এরপর ২০১৮ পর্যন্ত এ রোগের সংক্রমণ ঘটতে দেখা গেছে। সার্স-কভ ও মার্স-কভ রোগের সংক্রমণ ক্ষমতার হার ও রোগবিস্তারের গন্ডি বিবেচনায় এই দুটি রোগের প্রাদুর্ভাবকে ‘এপিডেমিক’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০১৯ সালের শেষ অবধি ডিসেম্বর মাসে ২০১৯- নভেল করোনা ভাইরাস নামে যার বিজ্ঞানসম্মত নাম হলো বিটা-বি সিভিয়ার একিউট রেস্পিরেটরি সিনড্রোম করোনা ভাইরাস সংক্ষেপে যাকে আমরা ডাকি ‘সার্স- কভ-২’ নামে; দুর্দান্ড প্রতাপের সাথে অতিমাত্রায় ছোঁয়াচে সংক্রমণ ক্ষমতার অধিকারী হয়ে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে আবির্ভূত হয়। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা)-এর মহাপরিচালক গত ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে ‘সার্স- কভ-২’ ভাইরাসটির দ্বারা সংক্রমিত রোগটির নামকরণ করেন কোভিড-১৯। বিশ্বের হাতেগোনা কয়টি দেশ ব্যতীত বিশ্বব্যাপী এ রোগমহামারি আকারে বিস্তারলাভ করে চলেছে; মৃত্যুর হার কোথায় গিয়ে ঠেকবে এখনো বলার সময় হয়নি। এ যেন একটা অগ্নিস্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানলের রূপ পরিগ্রহ করেছে। এরূপ ভয়াবহতা বিবেচনায় ১২ মার্চ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দাপ্তরিকভাবে এ সংক্রমণকে ‘পেনডেমিক’ হিসেবে ঘোষণা করে।

‘সার্স-কভ-২’ ভাইরাসটি আগের যে কোনো আরএনএ ভাইরাসদের মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং অত্যন্ত ছোঁয়াচে। ভাইরাসগুলোর আকৃতি সাধারণত গোলাকার এবং এর পরিধি ৪০ থেকে ১৬০ ন্যানোমিটার। ভাইরাসটির কেন্দ্রে আছে নিউক্লিয়ক্যাপসিড, তারপরে মেমব্রেন, এরপরে ইনভেলাপ এবং ইনভেলাপের ওপরে মুকুটসদৃশ্য স্পাইক। এর আরএনএ জিনোমে ২৯৮৯১টি নিউক্লিওটাইড আছে যার দৈর্ঘ্য হলো ৩০কেবি, ৫ নম্বর প্রান্তে একটি ক্যাপ এবং তিন নম্বর প্রান্তে একটা পলি-এ লেজ আছে; আর এনকোডিং এর জন্য ৯৮৬০টি নিউক্লিওটাইড আছে। এ ভাইরাস যা কেবল চোখ, নাক এবং মুখ দিয়ে সংক্রামক মাত্রায় প্রবেশ করলেই একজন রোগাক্রান্ত হয়।
পরম করুণাময়ের অপার মহিমায় চোখ, নাক এবং মুখ রোগ সংক্রমণ থেকে বাধা প্রদান করে প্রাথমিক স্তরে আমাদেরকে সুরক্ষা প্রদানের জন্য মানুষের ইমিউন সিস্টেমকে তিনটি প্রতিরক্ষা স্তরে আচ্ছাদিত করার ব্যবস্থা রেখেছেন। প্রতিরক্ষার প্রথম স্তরটি হল ত্বকবাস্কিন। এই ত্বকে প্রায় ১৯টি পর্বের ১০০০ প্রজাতির বিভিন্ন প্রকার অনুজীবের বসবাস; এদেরকে মাইক্রোবায়োটা বলা হয়। এ ছাড়াও শরীরের ত্বক এবং অভ্যন্তরের গাট-মাইক্রোবায়ম মিলে প্রায় ১০০ ট্রিলিয়নের বেশি অণুজীব বসবাস করে। দেখা গেছে শরীরের ওজনের ১ থেকে ৩ শতাংশ হয়, সেই হিসেবে পূর্ণাঙ্গ মানবদেহে দুই থেকে ছয় পাউন্ড অনুজীব প্রতিরক্ষার বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত। বেশিরভাগ অনুজীব আমাদের জন্য ক্ষতিকর নয়, কিছু আছে সংক্রামক কিন্তু আমাদের ত্বকের পিএইচ চার থেকে সাড়ে চার পর্যন্ত অর্থাৎ অম্লধর্মী হওয়ার কারণে অন্যান্য মারাত্মক রোগ জীবাণু সহজে সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম হয় না; এরা আমাদের ত্বকে বসবাসের বিনিময়ে তারা পাহারায় নিয়োজিত থাকে। চোখ দিয়ে কোনো সংক্রামক জীবাণু প্রবেশ করার চেষ্টা করলে প্রাণপণ বাধা দেয় সেখান থেকে উৎসেচক বা অশ্রু বিসর্জনের ফলে জীবাণু ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। নাক দিয়ে কোনো সংক্রামক রোগ জীবাণু ভিতরে প্রবেশ করতে গেলে প্রথমে নাকের নাসারন্ধ্রে অবস্থিত লোমগুলি এদেরকে ভিতরে যেতে বাধা দেয় এবং লোমকূপের গোড়ায় ঝিল্লি হতে নিঃসৃত আঠালো পদার্থ বেশিরভাগ জীবাণুকে আটকে রাখে, পরিশেষে এগুলি snot-এ পরিণত হয়; যা পরে আমরা পরিষ্কার করে ফেলি। অজুর সময় নাসারন্ধ্র পরিষ্কার করার কথা বলা হয়েছে। এরূপ পরিস্কার থাকলে আঠালো পদার্থ নিঃসরণ আরও ভাল হয়। এছাড়া মুখ কোনো খাদ্যদ্রব্য খাওয়ার প্রাক্কালে চোখের দৃষ্টি, হাতের স্পর্শ, নাকের ঘ্রাণশক্তি ও জিহ্বা খাবারটির অর্গানোলেপটিক কোয়ালিটি নির্ধারণ করে, পঁচা-বাসি খাবার মুখের ভিতরে গ্রহণ না করার ইঙ্গিত দিয়ে সংক্রামক রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু প্রবেশে বাধা দেয়। মুখ দিয়ে অল্প কিছু পেটে ঢুকলেও সাধারণত তা এসিডেনষ্ট হয়ে যায়। এভাবেই আমাদের ত্বক, চোখ, নাক এবং মুখ রোগ সংক্রমণ থেকে বাধা প্রদান করে আমাদেরকে প্রাথমিক স্তরে সুরক্ষা দিয়ে থাকে।

প্রতিরক্ষার দ্বিতীয় স্তর: যখন কোনো সংক্রামক রোগজীবাণু বা ফরেনপার্টিক্যাল নাসারন্ধ্রের লোম এবং লোমকূপের গোড়ার আঠালো পদার্থ পেরিয়ে মিউকোসায় উপনীত হয় তখন ফুসফুস থেকে ঘন্টায় একশ মাইল বেগে বাতাস-এর সাথে রোগজীবাণু বের করে দেয়; যাকে আমরা হাঁচি বলি। একটা হাঁচি একলক্ষ রোগজীবাণু বা ফরেনপার্টিক্যালকে বের করে দিতে পারে (Patti Wood)। সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে বয়স এবং লিঙ্গ ভেদে হাঁচির গতিবেগের তারতম্য ঘটে। মধ্যবয়সী পুরুষের ক্ষেত্রে এই গতিবেগ ৩.৩ থেকে ১৪ মিটার/সেকেন্ড এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ২.২ থেকে ৫.০ মিটার/সেকেন্ড। এরূপ হাঁচি একবার হতে পারে, যতক্ষণ রোগজীবাণু বা ক্ষতিকর ফরেনপার্টিক্যাল থাকে ততক্ষণ অনৈচ্ছিক উপর্যুপরি একাধিকবার হাঁচি হতে পারে। এজন্য হাঁচি দিলে ইসলামে রোগ জীবাণুর হাত থেকে মুক্ত করার কৃতজ্ঞতা স্বরূপ এর পরপরই ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলার কথা বলা হয়েছে এবং এরূপ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে যে শুনবে তিনিও তার উপরে রহমতের জন্য প্রতি উত্তরে ‘ইয়ারহামুকুল্লাহ’ বলবেন। হাদিসে এরূপ তিনবার পর্যন্ত বলার বিধান আছে চতুর্থ বা ততোধিক ক্ষেত্রে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করাকে ইচ্ছাধীন করা হয়েছে। মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করা হয় যে, “তোমরা যদি শোকর-গোজার হও এবং ঈমান আন, তবে তোমাদের শাস্তি দিয়ে আল্লাহ্ কি করবেন? আর আল্লাহ্ (শোকরের) পুরস্কারদাতা সর্বজ্ঞ।” (সূরা আন-নিসা ৪ : আয়াত ১৪৭)

এখন কোভিড-১৯ রোগের তৃতীয় ওয়েব পরবর্তী কমিউনিটি পর্যায়ে বিক্ষিপ্ত ওয়েব চলমান, বিশেষ করে এ সময় প্রাকৃতিক হাঁচিও বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। রোগাক্রান্ত ব্যক্তি তার হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বের হওয়া ড্রপলেট ১ মিনিটে ২৬ ফুট পর্যন্ত রোগ জীবাণু ছড়িয়ে দিতে পারে এবং ৪১ থেকে ৪৪ শতাংশ ভাইরাল সেড তৈরি করতে পারে। তাই বিশেষত লিফ্টের মধ্যে বা হাট-বাজার বা লোক সমাগম স্থলে উপযুক্ত মাস্ক ব্যবহার করা সমীচীন। মাস্ক বহমান বাতাসে তিন ঘন্টা, স্থির বাতাসে কয়েকঘণ্টা সক্রিয় থাকা ভাইরাস থেকে শতকরা ৯৫ ভাগ সুরক্ষা দিতে সক্ষম আর নিজের হাঁচি-কাশি থেকে অন্যকেও অনুরূপভাবে সুরক্ষা দিতে সক্ষম। হাঁচি প্রদানের সময় বের হওয়া ড্রপলেটগুলো যেন অন্যের ক্ষতির কারণ না হয় সেজন্য সঙ্গে রুমাল থাকলে রুমাল দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখা অথবা তাৎক্ষণিকভাবে কিছু না থাকলে কনুই এর মাধ্যমে আড়াল করে সৌজন্যে প্রদর্শনের কথা বলা হয়। এ প্রসঙ্গে একটি হাদিসের অবতারণা করা যেতে পারে, হাদিসটি হলো নবি করিম (সা.) দেখলেন যে, একজন ব্যক্তি উটের পিঠ থেকে নেমে উটটি না বেঁধে মসজিদে আগমন করলেন। তিনি তখন উটটি বেঁধে রেখে আসার জন্য বললেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন যে তিনি কেন উটটি বেঁধে রেখে আসলেন না? ঐ ব্যক্তি জানান যে তিনি আল্লাহর উপর ভরসা করে উটটি রেখে এসেছিলেন। নবি করিম (সা.) জানান যে আগে উটটি বেঁধে, তার পরে আল্লাহর উপর ভরসা করা দরকার। এ সমস্ত কারণে মাস্ক পরিধানের সরকারি আদেশটি খুবই সময়োপযোগী একটা সিদ্ধান্ত। একইসাথে স্মরণ রাখতে হবে যে এই মাস্ক যথাযথ নিয়ম অনুযায়ী পরিধান ও পরিত্যাগ করা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না রাখতে পারলে সেটাই করোনা ভাইরাস ছাড়াও অন্যান্য সংক্রামক জীবাণুর মাধ্যমে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।

তৃতীয় স্তরের নিরাপত্তা: প্রতিরক্ষার দ্বিতীয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যুহ ভেদ করে কতগুলো সার্স-কভ-২ ভাইরাস দেহাভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করলে একজন সুস্থ মানুষ রোগাক্রান্ত হবে সেই সংখ্যা এখনো জানা যায়নি। তবে সার্চ-কভের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ন্যূনতম ১০০০টি ভাইরাস এর কথা জানা গেছে। কোভিড-১৯ রোগাক্রান্ত রোগীর সাধারণ কাশিতে প্রায় ৩০০০ ড্রপলেট থাকে; ১ মিলিলিটার থুতুতে ভাইরাসের ঘনত্ব ১০০ মিলিয়ন পর্যন্ত হতে পারে। একটা সূক্ষ্ম ড্রপলেটে (১ থেকে ৫ মাইক্রোমিটার) কমপক্ষে কুড়িটি ব্যাকটেরিয়া থাকার কথা জানা গেছে, তবে কতটি ভাইরাস থাকে তা জানা যায়নি। যা হোক, মানবদেহকে রোগাক্রান্ত করতে সক্ষম এমন সংখ্যক করোনা ভাইরাস বা সংক্রামক রোগজীবাণু দেহাভ্যন্তরে প্রবেশ করে তখন দেহের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতঙ্গের কোষে থাকা সৈনিকেরা আগন্তক রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে দেয়।

মাইল্ডডিজিজ (প্রথম পর্যায়): সার্স-কভ-২ ভাইরাস প্রথমেই গলবিলের কোষকে আক্রমণ করে। আক্রমণের শুরুতেই করোনার গ্লাইকোপ্রোটিন এর সাব ইউনিট-১ ট্রাকিয়াল কোষ ঝিল্লির সাথে নিজেকে গ্লুর মত করে আটকে ফেলে। এরপর সাব ইউনিট-২ এর মাধ্যমে নিজের এনভেলাপে থাকা পজিটিভ সিঙ্গেল স্ট্রেনন্ডের ৩০ কেবি দৈর্ঘ্যের আরএনএ মানবকোষের মধ্যে প্রবিষ্ট করিয়ে দেয়। সামগ্রিক এই প্রক্রিয়াটিকে মেমব্রেন ফিউশন ও এনডো-সাইটোসিস নামে আখ্যায়িত করা হয়। এরপর সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে রেপ্লিকেশন এর মাধ্যমে অতিদ্রুত সমরূপ ও সমক্ষমতা সম্পন্ন ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি ঘটতে থাকে। সংখ্যাধিক্যের কারণে একসময় কোষ ঝিল্লি বিদীর্ণ হয়ে পড়লে, সকলেই পূর্ণ উদ্যমে পার্শ্ববর্তী কোষগুলোকে আক্রান্ত করতে থাকে। এভাবে বংশবিস্তারের সাথে সাথে উদ্ভূত নন-স্ট্রাকচারাল প্রোটিন মানব দেহের সহজাত ইমিউন রেসপন্সকে ব্লক করে দিতে সক্ষম এবং ঝটিকা আক্রমণ চালিয়ে মানব কোষের আন্তঃসাংকেতিক বা সিগনালিং পদ্ধতিকে বিপর্যস্ত করে দেয়। বিজ্ঞানের পরিভাষায় এ অবস্থাকে ‘সাইটোকাইন স্টম’ বলা হয়। আক্রান্তের ২-৩ দিনের মধ্যে এগুলো ঘটে, যা আপার রেসপিরেটরি ট্রাক্ট ইনফেকশনস (ইউআরটিআই) নামে অভিহিত। ফলে উপসর্গ হিসেবে গলাব্যথা, স্বরভঙ্গ এবং জ্বরও সাথে থাকতে পারে। এ সময় ডব্লিউবিসি মারা যাওয়ায় রক্ত পরীক্ষায় রক্ত কণিকায় ডব্লিউবিসি এবং লিম্ফোসাইটস এর সংখ্যা কম থাকতেও পারে মর্মে জানা গেছে। চীনের উহানে ৮১ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে এমন ঘটতে দেখা গেছে।

সিভিয়ারডিজিজ (দ্বিতীয় পর্যায়): এরপর ব্রঙ্কিয়াল টিউব হয়ে করোনা ভাইরাস বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়ে ফুসফুসের কিনারা বা পেরিফেরিয়াল দিক থেকে অ্যালভিওলাইকে আক্রান্ত করতে থাকে এবং লোয়ার রেস্পিরেটরি ট্রাক্টইনফেকশনস (এলআরটিআই) শুরু হয়। এ পর্যায়ে হিমোগ্লোবিনের আয়রন পৃথক করে দেয় এবং অক্সিজেন পরিবহন করতে বাধারসৃষ্টি করে ফলে ফুসফুসকে বেশি কাজ করতে হয়। বেশি কাজের চাপে অ্যালভিওলাই ফুলে গিয়ে ইনফ্লামেশন সৃষ্টি করে। ফলস্বরূপ, ফোলা অ্যালভিওলাইয়ে নিঃসৃত তরল ও মৃত প্রতিরক্ষা কোষগুলো জমা হতে থাকায় নিউমোনিয়া দেখা দেয় এবং ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ফুসফুস শতকরা ৫০ ভাগ কার্যকারিতা হারায়। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে গড়ে সাড়ে ছয় দিনের পর ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস, বাচ্চাদের ক্ষেত্রে টেকিপেনিয়া উপসর্গসমূহ দেখা যায়। এক্স-রে তে নিউমোনিয়ার চিহ্ন দেখা যায় এরূপ উপসর্গ সার্স-কভ ও মার্স-কভ রোগে দেখা গেলেও কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে নিউমোনিয়াসাইটস টাইপ-২ তে বেশি পরিলক্ষিত হতে দেখা গেছে। চীনে ১৪% কোভিড-১৯ রোগীর ক্ষেত্রে এরূপ ঘটতে দেখা গেছে।

ক্রিটিক্যালডিজিজ (তৃতীয় পর্যায়): পোষককোষ এবং কলাসমূহকে করোনার আক্রমণের সবচেয়ে ভয়াবহ উপসর্গ হিসেবে সিভিয়ার নিউমোনিয়া, ডিস্পেনীয়া সাথে জ্বর, হাইপক্সেমিয়া উপসর্গগুলিই নয় বরং এর সাথে সাইটোকাইন রিলিজ সিনড্রোম; একিউট রেস্পিরেটরি ডিস্ট্রেস সিনড্রোম প্রভৃতিসহ সেপটিক শক; মাল্টিপল অর্গান ডিসঅর্ডার; মাল্টিপল অর্গান ফেলিওর দেখা যায়; এটাই এই রোগের বিশেষত্ব। রোগীকে আর বাঁচানো সম্ভব হয় না, মৃত্যুবরণ এর শেষ পরিণতি। চীনের উহানে কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে ৫% রোগীর ক্ষেত্রে এরূপ জটিল অবস্থা দেখা গেছে।

এই যুদ্ধের শেষে জয়-পরাজয় নির্ভর করে শ্বেত রক্ত কণিকা বা ডব্লিউবিসি, ন্যাচারাল কিলার সেল, টি-সেল, বি-সেল, লিম্ফো সাইটস, ম্যাক্রোফাজ নামক প্রভৃতি বিশাল সৈন্যবাহিনীর ন্যায় ইমিউন কোষের সংখ্যা ও সক্ষমতার ওপর। মানব সন্তান মাতৃগর্ভ হতে বংশগতভাবে এবং ভূমিষ্ঠ হওয়ার সাথে সাথে সহজাত ইমিউন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এছাড়া মহান আল্লাহ্ বয়স বাড়ার সাথে সাথে এবং পরিবেশের সাথে অভিযোজনের জন্য প্রতিনিয়ত অর্জিত ইমিউনিটি লাভ করার ক্ষমতা দিয়েই মানুষকে পৃথিবীতে পাঠান। গবেষণায় দেখা গেছে অভিযোজিত হওয়ার ক্ষেত্রে একজন মানুষ প্রায় ১০০ মিলিয়নের অধিক ইমিউন লাভ করে থাকে। সুবহানাল্লাহ্!
গবেষণায় আরো দেখা গেছে যে এই ইমিউন কোষগুলির কার্যক্ষমতা ও সংখ্যাধিক্যের হ্রাস-বৃদ্ধি নির্ভর করে মানুষের আহার, নিদ্রা ও জীবনযাপন প্রণালীর ওপর। আমার মনে হয়েছে, মনে রাখার সুবিধার্থে এক্ষেত্রে ইতিবাচক তিনটি এস এবং নেতিবাচক তিনটি এস অর্থাৎ এই ৬টি এস (ঝ) অনুসরণ করে আমাদের ইমিউনিটিকে বাড়াতে পারি।

ইতিবাচক তিনটি এস নিম্নরূপ:
১। স্পেসিফিক স্টিমুলেটিং ফুড: খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে হালাল রুজি উপার্জনের মাধ্যমে ক্রয়কৃত খাবারের খাদ্য উপাদান যথা- কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট খাবারগুলো সমন্বয় করে খাওয়া অর্থাৎ সুজি দিয়ে রুটি খাওয়ার মতো কার্বোহাইড্রেট দিয়ে কার্বোহাইড্রেট খাওয়া যেন না হয়। শাকসবজি ও ফলমূল নির্বাচনের ক্ষেত্রে কতিপয় ইমিউন স্টিমুলেটিং খাবার তালিকায় সংযোজন করতে হবে। সবজি পছন্দের ক্ষেত্রে মাশরুম একটি সুপার-ফুড হিসাবে পরিচিত। মানবদেহ বা পোষক কোষে মাশরুম ইমিউন- স্টিমুলেটিং এবং সংক্রামক জীবাণু রেপ্লিকেশন এর ক্ষেত্রে ইমিউন-ইনহিবিটর হিসাবে কাজ করে; তাই উভয়দিকের ইতিবাচক কাজের জন্য মাশরুম ইমিউনো-মডুলেটর হিসাবে ইমিউন সিস্টেমে অবদান রাখে। তাছাড়া সুরা বাকারার ৫৭ নম্বর আয়াতে মাশরুমের কথা বলা হয়েছে। ভিটামিন-ডি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রোটিন উৎপাদন করে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে। ভিটামিন-ডি ব্যতীত ক্যালসিয়ামের শোষণ হয় না, হাড়ের গঠন ঠিক না থাকলে কর্মক্ষম থাকা সম্ভব হয় না, এমনকি ব্যায়াম করাও যায় না। তাই ভিটামিন-বি৬, ভিটামিন-সি ও ভিটামিন-ই এর সাথে সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন-ডি এর গুরুত্ব ততোধিক। গৃহে অন্তরীণ থাকা অবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণ সূর্যালোক গ্রহণ করে ভিটামিন-ডি নিশ্চিত করতে হবে। যারা বিভিন্ন রোগের জন্য ওষুধ সেবন করেন তারা ফুড-সাপ্লিমেন্ট অথবা সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ভিটামিন গ্রহণের পূর্বে ডাক্তারের সাথে অবশ্যই পরামর্শ করে গ্রহণ করাই সমীচীন।
২। স্টে-অ্যাক্টিভ: দৈনন্দিন কাজে নিয়োজিত রেখে নিজেকে কর্মক্ষম রাখতে হবে। নারী-পুরুষভেদে প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে বয়স অনুযায়ী অ্যারোবিক বা এন-অ্যারোবিক ব্যায়াম করতে হবে। সপ্তাহে ৫ দিন অর্থাৎ দেড়শ ঘন্টা, ব্যায়াম যথেষ্ট বলে গবেষণায় দেখা গেছে।

৩। সাউন্ড-স্লিপ: পর্যাপ্ত ঘুম আল্লাহ্ তায়ালার অন্যতম নেয়ামত। এই নেয়ামত উপভোগ করতে হবে, ঠিকমতো ঘুম হলে কোষগুলি তাদের ক্লান্তি এবং অবসন্নতা দূর করে পূর্ণোদ্যমে কর্মক্ষম হয়ে উঠে, যার সাথে ইমিউন সিস্টেম সরাসরি সম্পর্কিত। গবেষণায় দেখা গেছে একটানা ৭ ঘণ্টা ঘুম শ্রেয় তবে যদি বিঘ্ন ঘটে সেক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটার সময়সহ ৮ ঘন্টার অধিক ঘুমের প্রয়োজন। এ জন্যই আল্লাহ্ পাক রাত্রিকে নিদ্রাযাপনের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন।

নেতিবাচক তিনটি এস নিম্নরূপ:
৪। স্ট্রেস-ফ্রি: স্ট্রেস-ফ্রি থাকতে হবে। ফিজিক্যাল স্ট্রেস, মেন্টাল স্ট্রেস ও ইমোশনাল স্ট্রেসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এজন্য অভ্যাস নেই এমন কায়িক পরিশ্রম হঠাৎ করে করা যাবে না। যে সমস্ত কার্যক্রমে মানসিক শান্তি আসে তা করা যেতে পারে। আবেগীয় স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা অবলম্বন করতে হবে। কোনো কারণে উত্তেজিত হলে দন্ডায়মান থাকলে বসে যাওয়া, বসা থাকলে শুয়ে পড়া এবং মুসলমানগণ অজু করে প্রার্থনায় নিমগ্ন হওয়া বা ধর্মীয় বই-পুস্তকে মনোনিবেশ করলে আবেগ সম্বলিত স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এভাবে আবেগসমূহকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে কটিসল ও অ্যাড্রিনালিন হরমোন কম নিঃসৃত হয় যা ইমিউন সিস্টেমে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।

৫। সুগার-ফ্রী: খাদ্য গ্রহণে বিশেষ করে বয়স্করা ফল-মূল থেকে বিভিন্ন ধরনের চিনি পেয়ে থাকেন; সেক্ষেত্রে সুক্রোজরূপি চিনি গ্রহণ না করাই শ্রেয়। গান্ধীজি চিনিকে ‘হোয়াইট এনিমি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

৬। সল্ট-ফ্রী: কমসোডিয়াম বা লবণযুক্ত খাবার গ্রহণ প্রয়োজন; কারণ অতিরিক্ত লবণ তথা সোডিয়াম স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কাঁচা লবণ না খাওয়াই সমীচীন।

যতদিন কোভিড-১৯ রোগের কার্যকর ঔষধ বা টিকা আবিষ্কার না হচ্ছে ততদিন প্রতিরোধই একমাত্র উপায়। হাদিসে আছে যখন তোমরা শুনবে যে কোনো শহরে প্লেগ প্রভৃতি মহামারি দেখা দিয়েছে তখন সেখানে যেওনা আর যদি কোনো এলাকাতে এ রোগ দেখা দেয় এবং তুমি সেখানেই থাকো তবে সেখান থেকে পলায়ন করবে না (বুখারী ৩৪৭৩ ও মুসলিম ২২১৮)। এ রোগ প্রতিকারের জন্য, এর বিস্তাররোধ অত্যাবশ্যক। এক্ষেত্রে দুটি উপায় আছে। একটি হচ্ছে ট্রাভেল বা ভ্রমণে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা, যাকে আমরা লকডাউন বলে থাকি তা অক্ষরে অক্ষরে প্রতিপালন করা। লকডাউনের মাধ্যমে হোম-কোয়ারেন্টাইন ও প্রাতিষ্ঠানিক-কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা। দ্বিতীয় উপায়টি হচ্ছে ট্রান্সমিশনের পথ রুদ্ধ করে সংক্রমণের ঝুঁকি কমানো। এটি সংক্রমণ পূর্ব-পর্যায়ে হাত ধৌত করা বা সেনিটাইজারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত পর্যায়ে ভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি কমানো। দ্বিতীয়টি হলো সংক্রমিত হলে আইসোলেশন এর মাধ্যমে রোগাক্রান্ত রোগীকে পৃথক রেখে ট্রান্সমিশনকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এর বিস্তার লাভের বা সংক্রমিত হওয়ার বিদ্যমান হার ২ থেকে ৩ জনের স্থলে নামিয়ে ১ জনের নিচে নিয়ে আসতে হবে। এরূপ পরিস্থিতির ক্ষেত্রে একটি হাদিস উল্লেখ করা যেতে পারে আর তা হলো: ‘‘কোনো ব্যক্তি যদি ধৈর্য সহকারে বসবাস করে এবং এতোটুকু বিশ্বাস যে রাখে তার শুধু সেই বিপদ হতে পারে যা আল্লাহ্ তার জন্য নির্ধারিত রেখেছেন তবে এমন ব্যক্তি শহিদের মত সওয়াব পাবে।” (বুখারী ৫৭৩৪) এখন দেখা যাক এরূপ সংক্রামক রোগ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের সূরা আল বাকারার ২৪৩ নম্বর আয়াতে কি বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, “আপনি কি তাদেরকে দেখেননি যারা মৃত্যুভয়ে হাজারে-হাজারে স্বীয় আবাসভূমি পরিত্যাগ করেছিল? অতঃপর আল্লাহ্ তাদেরকে বলেছিলেন, ‘তোমরা মরে যাও। তারপর আল্লাহ্ তাদেরকে জীবিত করেছিলেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল; কিন্তু অধিকাংশ লোক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।”

জন্মের পর মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। পৃথিবী ও আসমান এবং এ উভয়ের মধ্যে যা কিছু বিদ্যমান তা সব মহান আল্লাহর। একথা আমাদের স্মরণ রাখতে হবে যে আমরা যে অবস্থায় পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলাম ঠিক এমনই খালি হাতে অর্থাৎ কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিতো নয়ই, বায়ুমন্ডলে থাকাবস্থায় এখান থেকে যে অক্সিজেন গ্রহণ করতাম তাও বায়ুমন্ডলে ফিরিয়ে দিয়ে ‘শেষ নিঃশ্বাস’ আকারে রেখে নিঃস্ব হয়েই ফিরে যেতে হবে। সুতরাং সৃষ্টিকর্তা তথা পরম করুণাময়ের কাছে নিজ কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চেয়ে কৃতজ্ঞ ভাজন হয়ে তার অনুগ্রহ কামনা করে চলমান অবস্থার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ উপায় অবলম্বন করে যার যে অবস্থান থেকে নিজ নিজ কাজে ব্রতী হতে হবে। এখানে সূরা আল মায়েদার ১৬ নম্বর আয়াতটি প্রণিধানযোগ্য। অর্থাৎ- ‘‘যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসরণ করে, এ দ্বারা তিনি তাদেরকে শান্তির পথে পরিচালিত করেন এবং তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অন্ধকার হতে বের করে আলোর দিকে নিয়ে যান। আর তাদেরকে সরল পথের দিশা দেন।’’ এখন আমরা বৈশ্বিক তথ্য-উপাত্ত ভিত্তিক উদ্ভূত সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়গুলি জানতে পারছি তবে আমাদের দেশেও এখন কোভিড-১৯ সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে; এগুলোকে বিশ্বের সাথে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে পর্যালোচনার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে ছোটো পরিসরে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় পর্যালোচনা কমিটি করে অগ্রগতি ও অগ্রাধিকার নির্ধারণ পূর্বক পোস্ট-করোনা ফেজ-এ করণীয় সম্পর্কে এখন থেকে চিন্তাভাবনা করতে হবে।

[লেখক : অতিরিক্ত সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ]

3 COMMENTS

  1. লেখাটি অনেক তথ্যবহুল,লেখাটি থেকে অনেক কিছু শিখার ও জানার আছে,ধন্যবাদ স্যার এতসুন্দর ও সময় উপ্যোগী একটি লেখা দেয়ার জন্য। আমার দৃঢ় বিশাস এই লেখা পড়লে সবাই অনেক উপকৃত হবেই।

  2. স্যার লিখাটি বেশ তথ্যসমৃদ্ধ এবং সময়উপযোগী হয়েছে।

  3. স্যার, লিখাটি বেশ অভিনব, তথ্যসমৃদ্ধ এবং সময়উপযোগী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here