দেওয়ানবাগ ডেস্ক : দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোয় আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা বেশি। তার পরও ঘনবসতিপূর্ণ এ অঞ্চলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা তুলনামূলক কম। তবে আদতেই সংখ্যাটা কম নাকি চিকিৎসাব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে আসল চিত্র উঠে আসেনি, তা নিয়ে গবেষণা হওয়া দরকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্বব্যাংকের ‘সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞরা দক্ষিণ এশিয়ার করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং আসল পরিস্থিতি বোঝার স্বার্থে গবেষণার ওপর জোর দেন। প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তান ও মালদ্বীপে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির পরিসংখ্যানভিত্তিক তথ্য তুলে ধরা হয়।
সম্প্রতি প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞরা পশ্চিমের উন্নত দেশগুলোর তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের গতি কম মনে হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁদের মতে, এ অঞ্চলজুড়ে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষা কম হয়েছে। তবে সার্কভুক্ত দেশগুলোয় লকডাউন ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কারণে সংক্রমণ কম হয়েছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে এখানকার মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতখানি, সেটাও গবেষণার দাবিদার বলে মনে করেন তাঁরা।
যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে করোনাভাইরাস মহামারি চরম আঘাত হেনেছে, সেখানে দক্ষিণ এশিয়ায় ওই ভাইরাস ততটা ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়নি। দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে এমন প্রবণতা শেষ পর্যন্ত বজায় থাকলে গোটা বিষয়টি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ গবেষণা হওয়া প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, সার্কভুক্ত দেশগুলোয় জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশি। পৃথিবীর মাত্র তিন শতাংশ ভূখণ্ডের এ অঞ্চলে বিশ্বের ২১ শতাংশ মানুষের বাস। অথচ বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের মধ্যে মাত্র ১১ শতাংশের অবস্থান এ অঞ্চলে এবং কভিড-১৯ রোগে এখানে মৃত্যুর হার এক শতাংশেরও কম।
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষার হার বাড়লে দক্ষিণ এশিয়ায়ও আরো বেশি মানুষের দেহে ওই ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়। বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করলেও প্রথম দিকে বাংলাদেশে আক্রান্ত মানুষের হার ছিল নগণ্য। পরবর্তী সময়ে মেডিক্যাল পরীক্ষার আওতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। সূত্র : ওয়ার্ল্ডব্যাংকডটঅরগ।