আবুল কালাম আজাদ খান
”মুজিব শতবর্ষে সোনার বাংলা, ছড়ায় নতুন স্বপ্নবেশ” শিশুর হাসি আনবে বয়ে, আলোর পরিবেশ। এবারের জাতীয় শিশু দিবসের প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জাতীয় শিশু দিবস পালন হয়েছে।
শিশু দিবস শিশুদের নিয়ে উদযাপিত একটি দিবস। এটি বর্তমানে পৃথিবীর ১৯০টি দেশে জানুয়ারী থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখে পালিত হয়ে থাকে। শিশু দিবসটি প্রথমবার তুরস্কে পালিত হয়েছিল ১৯২০ সালের ২৩ এপ্রিল। শিশুদের প্রতি যে বিশেষ যত্ন আর পরিচর্যার প্রয়োজন রয়েছে, তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পায় অনেক আগেই। ১৯২৫ সালে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি নিয়ে শিশু দিবস এর ১ম কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৪২ সালে জেনেভা কনভেনশনে প্রথম শিশু অধিকার সংক্রান্ত ঘোষণা করা হয়। ১৯৪৪ সালে জাতিসংঘ শিশু অধিকার ঘোষণা দেয়। ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে গৃহীত হয় মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র। যার ধারা ছিল শিশুদের অধিকার সংক্রান্ত। শিশু অধিকার ঘোষণায় ১৯৫৯ সালে ১০টি অধিকার সম্পাদনা করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ একটি সর্বসম্মত খসড়া প্রণয়ন করে। ১৯৭৪ সালে ডিসেম্বর মাসে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। যুদ্ধকালীন অবস্থায় বা কোনো দুর্যোগের সময় শিশুদের রক্ষা করার জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। আর সে কারণেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে শিশু আইন ১৯৭৪ সালে প্রণয়ন করেন। ১৯৭৫ সালে ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে বাংলাদেশের সকল শিশু সংগঠন শিশুদের নিয়ে গণভবনে অংশগ্রহণ করেন। জাতীয় শিশু কিশোর ও যুব কল্যাণ সংগঠন চাঁদের হাট-এর শিশুদের পক্ষ থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করেন। সেই শ্রদ্ধাঞ্জলিতে লেখা ছিল চীন, রাশিয়া এবং ভারতের রাষ্ট্র প্রধানদের জন্মদিনে জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয়। আমরা বাংলাদেশে এই দিনে জাতীয় শিশু দিবস পালন করতে চাই। তখন তিনি (জাতির জনক বঙ্গবন্ধু) হাসি দিয়ে বলেন- ওরে পাগল আমি কি আমার জন্মদিনে এই ঘোষণা দিতে পারি? তোরা দিস। আমি তো তোদেরই একজন। এই খবরটি তৎকালীন দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায় বড়ো করে ছাপা হয়। ১৯৯৬ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী পালন করার সময় আবার বাংলাদেশের সকল শিশু সংগঠন শিশুদের নিয়ে গণভবনে অংশগ্রহণ করেন। তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট জাতীয় শিশু কিশোর ও যুব কল্যাণ সংগঠন ‘চাঁদের হাট’ এর শিশুদের পক্ষ থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করেন। সেই দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায় বড়ো করে ছাপানোর কথা বলা হয়। তারপর প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার তার বক্তৃতায় ঘোষণা দেন যে, আগামী বছর থেকে এই দিন জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হবে। ১৯৯৭ সাল থেকে শিশু সংগঠনগুলি এই দিনটি পালন করে আসছে। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সরকারীভাবে এই দিবসটি পালন করে নাই। ২০০৯ সালে সরকারকে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে ১৯৭৪ সালে প্রণীত শিশু আইনকে যুগোপযোগী করার জন্য। ২০০৯ সাল থেকে আবার সরকারীভাবে জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয়। এবারের জাতীয় শিশু দিবসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে আহবান জানান- সব শিশু সম অধিকার নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাবা মা, পরিবার ও সমাজের ভুমিকা অপরিসীম। শিশুর প্রতি সহিংস আচরণ এবং সবধরনের নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
সর্বোপরি প্রতিটি শিশুকেই আপন করে ভাবতে হবে পেশা ও সামাজিক অবস্থান বা মর্যাদা নির্বিশেষে সমাজের সকল মানুষকে প্রতিটি শিশুর প্রতি আরো ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতে হবে, তাহলেই প্রতিষ্ঠিত হবে শিশু দিবস। বাংলাদেশ পাবে একটি শোষণমুক্ত আগামী প্রজন্ম।
মাশাল্লাহ্
শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ, শিশুদের শিশু অধিকার ও
শিশুদের প্রতি যত্নবান হওয়া সকলের একান্ত কর্তব্য। শিশুরা নিরাপদে বেড়ে উঠুক, বেড়ে উঠুক জাতীর ভবিষ্যৎ।
আলহামদুলিল্লাহ্
মাশাল্লাহ্
আলহামদুলিল্লাহ্ !
আলহামদুলিল্লাহ