অনলাইন ডেস্ক: কোরবানির পশুর হাট হাতছানি দিচ্ছে। গরু-ছাগল উৎপাদনে বাংলাদেশ বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই স্বয়ংসম্পূর্ণ। ভারতীয় কিংবা বিদেশি গরু-ছাগলের প্রয়োজন নেই, দেশেই পর্যাপ্ত গরু-ছাগল রয়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, কোরবানির জন্য ১ কোটি ৫ লাখ ৬২ হাজার ২৮১টি পশুর প্রয়োজন। কিন্তু চাহিদার তুলনায় প্রায় ১৫ লাখ পশু অতিরিক্ত রয়েছে। পশুর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ১৯ লাখ। তাছাড়া বিভিন্ন গৃহস্থালীদেরও পশু রয়েছে। যারা কোরবানির হাটে পশুটি বিক্রি করার জন্য প্রস্তুত করেছেন। দিন যত এগিয়ে আসছে ব্যবসায়ীদের শঙ্কা ততই বাড়ছে। লাভের আশা তো দূরে থাক, আসল তুলতে পারবেন কি না সেটাই এখন খামারিদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, ভারত কিংবা বিদেশি গবাদিপশুর কোনো দরকারই নেই। চাহিদার তুলনায় প্রায় ১৫ লাখ পশু অতিরিক্ত রয়েছে। একই সঙ্গে গত প্রায় ৪ মাসে করোনা পরিস্থিতির কারণে নিয়মিত বাজারে অর্ধেকের কম গবাদিপশু বিক্রি হয়েছে। এসব অবিক্রীত গরু কোরবানির হাটে যোগ হবে। এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জানান, দেশে পর্যাপ্ত গবাদিপশু রয়েছে। কোরবানির পশুর চাহিদার তুলনায় প্রায় ১৫ লাখ অতিরিক্ত রয়েছে। তবে বর্তমানে করোনার কারণে বিশ্বজুড়ে যে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে, তাতে পর্যাপ্ত পশু থাকলেও পশু বিক্রয়ে নানান মেরুকরণ হতে পারে। তিনি বলেন, আমরা প্রস্তুত রয়েছি, প্রতিটি হাটেই চিকিৎসক টিম থাকবে। কোনো অবস্থাতেই রোগা-ত্রুটিপূর্ণ গবাদিপশু হাটে ঢুকতে দেওয়া হবে না। ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাহ ইমরান জানান, দেশে পর্যাপ্ত গবাদিপশু রয়েছে। করোনা সংক্রমণের বিষয়টি না থাকলে এবার প্রতিটি হাটেই দারুণ কেনাবেচা হতো। এবার প্রায় ২০ শতাংশ গবাদিপশু কম বিক্রি হবে। তিনি বলেন, দেশে সারা বছর যে পরিমাণ পশু বিক্রি হয়, তার অর্ধেকের বেশি বিক্রি হয় কোরবানির হাটে। করোনা সংক্রমণের আগে দেশে প্রতিদিন ৪৫ কোটি টাকার গরু কেনাবেচা হয়েছে। বেশির ভাগই বিক্রি হতো কসাইদের কাছে। গত ৪ মাসে প্রতিদিন গড়ে ১০ কোটি টাকার কম গবাদিপশু কেনাবেচা হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. আবদুল জাব্বার শিকদার জানান, এবার সারা দেশে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার হাট বসার কথা রয়েছে। যার মধ্যে রাজধানীতে ৬টি হাট বসবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকেও দূরত্ব মেনে হাট বসানোর নির্দেশনা রয়েছে। ফলে এবার হাটের সংখ্যা বাড়ছে। তিনি বলেন, সারা দেশে ১২শ’ চিকিৎসক টিম হাটকেন্দ্রিক দায়িত্ব পালন করবে। ইতোমধ্যে দেশের বড় বড় খামারে গবাদি পশুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। পশুর হাট বসানোর জন্য পর্যাপ্ত খোলা জায়গা নির্বাচন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাটে প্রবেশ এবং অনলাইনে কেনাবেচায় উদ্বুদ্ধ করাসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
ডিজিটাল পশুর হাট শুরু : ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে কোরবানির পশু বিক্রির অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘ডিজিটাল হাট’ (www.digitalhaat.net) চালু করা হয়েছে। করোনা সংক্রমণ মোকাবেলায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, আইসিটি ডিভিশন, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এ ডিজিটাল হাট বাস্তবায়ন করছে। ক্রেতারা এ হাট থেকে ন্যায্যমূল্যে কেনা কোরবানির পশু ঢাকার ৫টি এলাকা থেকে মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ ও নিজ নিজ ঠিকানায় ডেলিভারি নিতে পারবেন বলে উদ্যোক্তা অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো জানিয়েছে।