বিজ্ঞান ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের পদার্থবিজ্ঞানীরা কণার বিষয়ে এক যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি আরো পরীক্ষায় শতভাগ নিশ্চিত হলে বহু বছর ধরে প্রচলিত বিজ্ঞানের মৌলিক তত্ত্ব বদলে যাবে।
ইলিনয়ের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফার্মিল্যাব কোলাইডার ডিটেক্টরের (সিডিএফ) বিজ্ঞানীরা সাব-অ্যাটমিক (পরমাণুর ভগ্নাংশ) কণার ভর প্রচলিত তত্ত¡মতে যা হওয়া উচিত প্রকৃতপক্ষে তার চেয়ে ভিন্ন ফল পেয়েছেন। এটি নিশ্চিত হলে মহাবিশ্ব কিভাবে কাজ করে সেই বিষয়ে ধারণাই অনেকটা পাল্টে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাদের পরীক্ষার ফলাফল আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং সফল তত্ত্বের সঙ্গে মেলে না। তাঁরা দেখেছেন, ‘ডাব্লিউ বোসন’ নামে পরিচিত কণাটির ভর প্রচলিত তত্ত্বের তুলনায় বেশি।
প্রকল্পের অন্যতম মুখপাত্র অধ্যাপক ডেভিড টোব্যাক প্রাপ্ত ফলাফলটিকে ‘স্তম্ভিত করে দেওয়ার মতো’ আখ্যা দিয়েছেন। ‘অন্যান্য আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ফলাফলটি নিশ্চিত করা হলে পৃথিবীটা অন্য রকম দেখাবে, বিশাল একটা রদবদল হবে’, বিবিসি নিউজকে বলেন টোব্যাক।
ডেভিড টোব্যাক আরো বলেন, ‘বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী কার্ল সাগান বলেছেন, অসাধারণ দাবির জন্য অসাধারণ প্রমাণের প্রয়োজন। আমরা মনে করি, আমাদের কাছে তা আছে। ’
সিডিএফের বিজ্ঞানীরা ‘ডাব্লিউ বোসনে’ ভরের মধ্যে যে পার্থক্য পেয়েছেন তা সামান্য। তত্ত¡ মতে যা হওয়া উচিত তার সঙ্গে এর তফাত মাত্র ০.১ শতাংশ। কিন্তু এর সম্ভাব্য প্রভাব বিশাল। কণা পদার্থবিদ্যার কথিত স্ট্যান্ডার্ড মডেলটি ৫০ বছর ধরে এ পর্যন্ত কোনো অসঙ্গতি ছাড়াই সাব-অ্যাটমিক কণার আচরণ এবং বৈশিষ্ট্যের ভবিষ্যদবাণী করে এসেছে।
সিডিএফের আরেক মুখপাত্র ইতালির অধ্যাপক জর্জিও চিয়ারেলি বিবিসি নিউজকে বলেন, গবেষণা দলটি ফলাফল দেখে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারেনি। ‘কেউ এমনটা আশা করেনি। আমরা ভেবেছিলাম হয়তো কোথাও কোনো ভুল হয়েছে। কিন্তু গবেষকরা অনেক কষ্ট করে প্রাপ্ত ফলাফল আবার খতিয়ে দেখে সম্ভাব্য ত্রুটি টি বের করার চেষ্টা করেছেন। তাঁরা কোনো ভুল খুঁজে পাননি’, বলেন অধ্যাপক।