আশেকে রাসুল এম. মুহিউদ্দীন খান ফারুকী
সৃষ্টির আদি হতে অনাদিকাল পর্যন্ত দয়াময় আল্লাহ্ স্বীয় পরিচয় মানবজাতির নিকট পেশ করার জন্য নবুয়তের যুগে নবি-রাসুল ও বর্তমান বেলায়েতের যুগে আওলিয়ায়ে কেরাম প্রেরণ করে আসছেন। তাঁদেরকে মানবজাতির নিকট পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন অভিনব পন্থায়। যা কিছু মানুষ অসম্ভব মনে করে, স্বীয় ক্ষমতার বাইরে জানে; ইহাই তাদের মাধ্যমে সম্পন্ন করেছেন।
অলৌকিকত্ব কি? : জ্যোতির্ময় আল্লাহর নুরময় সত্তাকে হৃদয়ে ধারণকারী সকল মহামানবের মাধ্যমে আল্লাহর ক্ষমতা, পরাক্রমশীলতা ও প্রভুত্বের প্রকাশ ঘটে। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় যাকে বলা হয় মুজেজা, কারামত, হুজ্জাত বা নিদর্শন। যা লৌকিক নয় উহাই অলৌকিক। এ সকল অলৌকিক ঘটনাপ্রবাহ নবি-রাসুল ও অলী-আল্লাহ্গণের জীবনে দলিল প্রমাণ সাক্ষী ও সনদ হিসেবে মহাকৌশলী আল্লাহ্ উপস্থাপন করে থাকেন। যে নিদর্শনগুলো নবি ও রাসুল এবং আল্লাহর বন্ধুদের পরিচয়ও বহন করে। যারা রাব্বুল আলামিনের সাথে মিশে একাকার হয়ে ফানা বাকা হাসিল করে আল্লাহর গুণে গুণান্বিত হন। লোহা যেমন আগুনের লেলিহান শিখায় জ্বলে পুড়ে স্বীয় অস্তিত্ব অগ্নি গর্ভে বিলীন করে দেয়, চিনি যেমন পানিতে মিশে স্বীয় অস্তি¡ত্ব বিলীন করে সুস্বাদু সরবতে পরিণত হয় এবং জিনগ্রস্ত মানুষ যেমন পুরোপুরি জিনের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় ঠিক তদ্রুপ মহামানবগণ আল্লাহ্ প্রেমের অনলে জ্যোতির্ময় হয়ে পরিণত হয়ে যান আল্লাহ্র প্রকাশ্য প্রতিবিম্বতে। এ স্তরে উপনীত মহামানবগণের চলন বলন কথন সকলই আল্লাহ্র অভিব্যক্তির বহিঃপ্রকাশ। সর্বশক্তির আধার আল্লাহ্ যা ইচ্ছে উহাই করতে পারেন, ঠিক তেমনি এ মহামানবের দ্বারা তারই প্রতিফলন ঘটতে থাকে। যাকে আমরা অলৌকিক কারামত বা মুজেজা বলে থাকি।
এমনই একজন মহামানব হলেন মহান সংস্কারক যুগের ইমাম সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজান। রাহমাতুল্লিল আলামিন হযরত রাসুল (সা.) কর্তৃক প্রতিশ্রুত এ মহামানবের সমগ্র জীবন অলৌকিকত্বে ভরপুর। আর কেনই বা হবে না, মহাবিশ্বের মহাপরিচালক রাব্বুল আলামিনের মহাপরিকল্পনা বায়স্তবায়নের যিনি মহানায়ক, কালের আবর্তে হারিয়ে যাওয়া মোহাম্মদী ইসলামের যিনি পুনরুদ্ধারকারী তাঁকে বিশ্ব মানবসভায় পরিচয় করিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব সে খোদ হেদায়েতদানকারী আল্লাহরই।
পবিত্র কুরআনের আলোকে অলৌকিকত্ব: সকল নবি-রাসুল ও আওলিয়ায়ে কেরাম নুরে মোহাম্মদীর ধারক ও বাহক। যে যুগে যিনি নুরে মোহাম্মদী ধারণ করেন তিনিই অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হন। যেমন হযরত মুসা (আ.)-এর হস্ত মোবারকের লাঠি স্বর্প আকৃতি ধারণ করেছিল। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছেন, “মুসা লাঠি নিক্ষেপ করলে সাথে সাথে তা সাপ হয়ে ছুটতে লাগলো।” (সুরা ত্বাহা ২০ : আয়াত ২০) এ অলৌকিক ক্ষমতার বলেই হযরত ঈসা মসীহ জন্মগ্রহণ করার পরেই কথা বলতে পারতেন।
তিনি জন্মান্ধ ও কুষ্ঠ ব্যধিগ্রস্থকে স্পর্শের দ্বারা ভাল করে দিতেন। পবিত্র কুরআনে বলা হচ্ছে- তারই মাধ্যমে আল্লাহর ইচ্ছা প্রকাশিত হয় বলে তিনি জন্মান্ধ ও কুষ্ঠ ব্যধিগ্রস্তকে নিরাময় করে দিতেন। এমনকি মৃত মানুষকে তিনি জীবিত করতেন। কুরআনের ভাষায়- আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি মৃতকে জীবিত করতেন। তিনিই কর্দম দ্বারা পাখি বানিয়ে ফুঁৎকার দিলে তা জীবন্ত হয়ে যেত। হযরত রাসুল (সা.) অলৌকিকভাবে হযরত জাবের (রা.)-এর দুমৃত সন্তানকে জীবিত করে দিলেন। যে শাহাদাৎ অঙ্গুলী মোবারকের নির্দেশে তিনি চাঁদকে দ্বিখণ্ডিত করেছিলেন, সে হস্ত মোবারকের স্পর্শেই বকরীর বাটে দুধের প্লাবন বইয়ে দিয়েছিলেন। পবিত্র কুরআর তাঁর সাক্ষী বহন করছে এভাবে, “কেয়ামত নিকটবর্তী, আর চন্দ্র দ্বি-খণ্ডিত হয়ে গেছে। অবিশ্বাসীরা এ মুজেজা প্রত্যক্ষ করে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এবং বলছে এটা তো চিরাচরিত জাদু।” (সুরা কামার ৫৪ : আয়াত ১-২)
এ অলৌকিত্ব সকল যুগেই বিদ্যমান। হাদিস শরীফে এসেছে- মুমিনের দিল আল্লাহর আরশ। প্রত্যেক যুগে সর্বশ্রেষ্ঠ মুমিনের দিলে আল্লাহ্ অবস্থান করে তাঁরই পরিচয়কে নিজের পরিচয়ে উপস্থাপন করেন। এ যুগের মহান সংস্কারক মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজানকে সর্বশ্রেষ্ঠ মুমিন করে আল্লাহ্ প্রেরণ করেছেন। যার মাঝে রাব্বুল আলামিন নিজে বিরাজিত হয়ে আছেন। হযরত রাসুল (সা.) বলেছেন “শীঘ্রই তোমরা তোমাদের প্রভুকে পূর্ণিমার চাঁদের মাঝে উজ্জলতর দেখতে পাবে।” সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাকে পূর্ণিমার চন্দ্রালোকে দেখানোর মাধ্যমে রাব্বুল আলামিন নিজের পরিচয় তুলে ধরেছেন যে, এ মহামানবের মাঝেই আমি বিরাজমান; তোমরা তার কাছে আসলেই আমাকে পাবে।
সূফী সম্রাটের অলৌকিকত্ব: Beyond less bound less and bottom less. ক্ষুদ্র একটি চামচ হাতে পৃথিবীর অথৈ জলরাশি পরিমাপের প্রয়াস যেমন একটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা, তেমনি সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজানের অলৌকিকত্ব উপস্থাপন করতে চাওয়া এর ব্যতিক্রম নয়। মহাকালের মহাবিস্ময় এ মহামানবের জীবন অলৌকিকত্বে ভরপুর। যিনি ভাষা, কাল ও ভৌগোলিক সীমা অতিক্রম করে জামে আম্বিয়ার বেলায়েত লাভ করে বিশ্ব মানবতার দূত হিসেবে আবির্র্ভূত হয়েছেন। উসওয়াতুল হাসানাতের জীবন্ত প্রতিবিম্ব নুরে মোহাম্মদীর ধারক ও বাহক সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেবলাজানপৃথিবীর সকল ধর্মের দায়িত্ব নিয়ে আগমন করেছেন এ ভুপৃষ্ঠে। মহান প্রভুর নুরে এলাহির প্রেমের বারিধারা বর্ষণ করে যিনি স্বীয় অনুসারীদের অন্তরকে করেছেন সজীব সতেজ নক্ষত্রতুল্য। জামে আম্বিয়া ও জামে আওলিয়ার খাছায়েলের অধিকারী এ মহামানবের মাধ্যমে বর্তমান সময়ে আল্লাহর ইচ্ছা ও শক্তিমত্তা প্রকাশিত হচ্ছে। তাঁরই দয়ার বদৌলতে পৃথিবীর আলো বঞ্চিত অন্ধ মানুষটি চোখের জ্যোতি ফিরে পেয়ে এ বসুন্ধরার সৌন্দর্য দর্শনে বিমুগ্ধ হচ্ছে। মনের ভাব প্রকাশ করার বাহন যার কাছে শুধুই অঙ্গভঙ্গি সে মুক মানুষটিকে দয়ার নজরে তিনি কাছে ডাকলে মায়ের ভাষায় সে জবাব দেয়। দুনিয়ার আদালত যখন ফাঁসির রশি ঝুলিয়ে দেয় কোনো আসামির গণ্ডদেশে রাষ্ট্রপতি যখন মারসি পিটিশন খারিজ করে দেয়, তখন কোনো মহান অলী ছাড়া কে পারে বাঁচাতে এ আসামীকে। আল্লাহর বন্ধু সূফী সম্রাটের দয়ায় ফাঁসির আসামী খালাস পেয়েছে। যাঁর চেহারা মোবারক দর্শনে অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থতা অনুভব করে। ঝড়ের কবলে পড়া বিমানটিকে নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে তিনিই রক্ষা করেছেন। রজনির বিভিষিকাময় অন্ধকারে যখন তাঁর মুরিদ সন্তান ডাকাতের নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছিল তখন তিনিইতো রক্ষা করেন। মেঘনার খড়স্রোতা নদীতে অন্ধ হাফেজ যখন তলিয়ে যায় তখন দয়াল বাবাই সন্তানকে উদ্ধার করে বাবে রহমত পর্যন্ত নিয়ে আসেন। যখন জাপানে বসে জনৈক আশেকের এ্যাপেন্টিসাইডের ব্যথায় জীবন সংকটাপন্ন তখন আপন মোর্শেদ সূফী সম্রাটই ছিল তার সহায়। আল্লাহর সৈনিক কুতুবুগণ যার নির্দেশে দেশ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করছে যার নির্দেশে অনাবৃষ্টি দূর হয়। রোধ হয় অতিবৃষ্টি। মনে হয় সৃষ্টিজগত পরিচালনার রিমোট কন্ট্রোল তাঁরাই হস্ত মোবারকে। যার দয়ায় নিঃসন্তান পেয়েছে কোলে ভরা দৃষ্টিদন্দন যাদুমণি, বেকার পেয়েছে কর্মসংস্থান। কুমিল্লার দাউদকান্দিতে তাঁরই দয়ায় মৃত মানুষ জীবিত হয়েছিল। তাঁর কাছে এসেছে অথচ আল্লাহর সাহায্য পায়নি এমন মানুষ তার শত্রুদের মাঝেও খুঁজে পাওয়া যাবে না। যে ধর্মকে আল্লাহ্ দিয়েছিলেন মানুষকে সাহায্য করার জন্য, বিপদগ্রস্তকে উদ্ধার করার জন্য, তাঁরই মহান পরিচয় লাভ করার জন্য; সূফী সম্রাটই সে ধর্ম। তিনিই পথ, যাকে অবলম্বন করলে মুক্তি সুনিশ্চিত।
মহাকালের মহাবিস্ময় চন্দ্র মাঝে সূফী সম্রাট : মহান মোর্শেদ সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেব্লাজানের পৃথিবীতে আগমনের পূর্বরাতে তাঁর মহীয়সী মাতা হযরত জোবেদা খাতুন (রহ.) স্বপ্নে দেখেছিলেন ঈদের চাঁদ আকাশ হতে নেমে এসেছে তারই কোলজুড়ে। সে ঈদের চাঁদ হয়ে সূফী সম্রাট জগতে শুভাগমন করেন। আজ সে চাঁদের বয়স দুনিয়ার হিসেবে ৭০ বছর পূর্ণ হলো। অলৌকিক জগতের মহাবিস্ময় চন্দ্রমাঝে সূফী সম্রাট। সমগ্র চাঁদজুড়ে যাঁর চেহারা মোবারক। এ কোনো ছবি নয় একেবারেই জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। মহান রাব্বুল আলামিন তাঁর মহান বন্ধুকে চন্দ্রমাঝে তুলে ধরলেন, পরিচয় করিয়ে দিলেন জগতবাসীর সাথে তাঁর বন্ধুকে। কি অভিনব পন্থা! কি চমৎকার উপস্থাপনা! উল্লেখ্য এ চাঁদটিও ছিল ঈদের চাঁদ। সূফী সম্রাটের দেশ বাংলাদেশ-সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রায় কয়েক কোটি মানুষ এ মহামানবকে চাঁদে দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেছে। আল্লাহ্ প্রমাণ করলেন চাঁদ যেমন সত্য, সূফী সম্রাট তেমনই সত্য। সমগ্র পৃথিবীকে যেমন একটি চাঁদই আলোকিত করতে পারে তদ্রূপ যুগের ইমাম সূফী সম্রাটই পৃথিবীর সকল ধর্মের মানুষকে হেদায়েতের আলো দিতে সক্ষম।
পরিশেষে একথা চাঁদের মতোই মহাসত্য যে, সৃষ্টির ইতিহাসে সূফী সম্রাটই একমাত্র মহামানব যাঁর জীবন্ত প্রতিচ্ছবি মহান রাব্বুল আলামিন চন্দ্রপৃষ্ঠে তুলে ধরেছেন। নবুয়ত ও রেসালতের যুগে মহান আল্লাহ্ হযরত রাসুল (সা.)-কে মিরাজে নিয়ে সম্মানিত করেছিলেন। তেমনি আল্লাহ্ পাক সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানকে বেলায়েত যুগের সর্বোচ্চ মর্যাদা দিলেন পূর্ণিমার চাঁদে সূফী সম্রাটের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে। সকল যুগে অলৌকিক কারামতই ছিল মহামনাবদের দলিল। যাঁর মাধ্যমে তাঁরা যে আল্লাহ্র মনোনীত, উহা প্রমাণ করা হতো খোদ মালিকের পক্ষ হতে। পবিত্র কুরআনের আলোকে সূফী সম্রাটের জীবনের অলৌকিকত্ব বিশ্লেষণ করলে এ কথা দ্বিধাহীন চিত্তে প্রমাণিত হয় যে, সূফী সম্রাট হুজুর কেব্লাজানই আল্লাহর মহান বন্ধু।
আলহামদুলিল্লাহ
সুন্দর পোষ্ট
very nice
আলহামদুলিল্লাহ্,
অত্যন্ত গুরুত্যপুর্ন পোস্ট , অনেক কিছু জানতে পারলাম ।
আলহামদুলিল্লাহ্
খুবই সুন্দর পোষ্ট
আলহামদুলিল্লাহ্