পরিপক্ক হয়ে উঠছে আম : দুশ্চিন্তায় চাষিরা

0
205

দেওয়ানবাগ প্রতিবেদক : গাছে গাছে ক্রমশ বড় হয়ে উঠছে আম। কিন্তু পরিবহন বন্ধ থাকায় চাষি ও ব্যবসায়ীদের এই আম বাজারজাত করা নিয়ে দুশ্চিন্তাও বাড়ছে। কারণ, আমকে পচন থেকে রক্ষায় দীর্ঘমেয়াদে সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা নেই।

তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও জেলা প্রশাসনের ভাষ্য, দুশ্চিন্তার কারণ নেই। চাষি ও ব্যবসায়ীদের সব রকম সহযোগিতা করা হবে। এবার রোজার পরেই রাজশাহীর আমের বাজার জমজমাট হয়ে উঠবে। আবহাওয়া ও বাজারজাতকরণ পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে এই মৌসুমে ৭৩৫ কোটি টাকার আম বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক জানান, এবার রাজশাহীতে ১৭ হাজার ৫৭৩ হেক্টর জমিতে আমের চাষ করা হয়েছে। এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। ফলন অনুযায়ী গড়ে ৩৫ টাকা কেজি দরে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ৭৩৫ কোটি টাকার আম বিক্রি করার সম্ভাবনা রয়েছে।

রাজশাহী জেলার সবচেয়ে বেশি আম কেনাবেচা হয় পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর হাটে। বানেশ্বর বাজারের আলমগীর হোসেন নামে এক আড়তদার বলেন, ‘‘আড়তের পাশাপাশি আমরা কয়েকজন ব্যবসায়ী মিলে বাগান থেকে আম কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে চাহিদা মোতাবেক সরবরাহ করি। এ বছর আমাদের প্রায় ৭৫ বিঘা আমবাগান কেনা আছে। করোনার কারণে এবার আমের বাজার কী হবে বলা মুশকিল।’’

রাজশাহীর নগরীর শালবাগান এলাকার ফল ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘‘ঈদের ছয়-সাত দিন আগে গোপালভোগ আম গাছ থেকে নামিয়ে বাজারে নিয়ে আসতে পারবো। তবে লকডাউনের এই পরিস্থিতিতে যদি ঢাকা থেকে অর্ডার না পাই তাহলে সেই আম রোজার পরেই নামাবো। এবার পরিস্থিতি নিয়ে একটু ভয়েই আছি। পরিবহন সমস্যা হলে আম নিয়ে বিপদে পড়ে যাবো।’’

আমচাষি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘‘বর্তমান প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন না হলে এবার আমে ব্যাপক লোকসান হতে পারে।’’

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বলেন, ‘‘আমের বাজারজাতকরণ নিয়ে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। অন্য জেলায় আম পরিবহনে ট্রাকসহ অন্য বাহন নিয়ে যেতে ব্যবসায়ীরা যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সেই সঙ্গে বাগান থেকে বাজারে কিংবা আড়তে আম নির্বিঘ্নে নিয়ে আসতে পারেন চাষিরা, সেদিকটায় লক্ষ্য রাখার জন্য বলা হয়েছে। এজন্য তারা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘গতবারের মতো এবারও আগেই বাগান থেকে আম নামানো যাবে। আগের মৌসুমে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক ১৫ মে থেকে গুটিজাতীয় আম পাড়া ও কেনাবেচা শুরু হয়েছিল। এবারও সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আম পাড়া ও বেচাকেনা শুরু হবে। তবে এবার আমের মুকুল দেরিতে এসেছিল। তাই রোজার পরেই আম বেচাকেনা শুরু হবে। এবার আমের ফলন ভালো হবে। কারণ, গাছে আমের ঘনত্ব যত কম হবে আকৃতি তত বড় হবে। ফলে ওজনও বাড়বে। এর মধ্যে পরিস্থিতি ভালো হলে তেমন সমস্যা নেই। আর অবনতি হলেও অর্থনৈতিক দিক চিন্তা করে আমরা সবরকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’’

গত মৌসুমে বাগান থেকে আম পাড়ার জন্য জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী ১৫ মে থেকে গুটি জাতীয় আম; ২০ মে গোপালভোগ; ২৫ মে রানীপছন্দ, খিরসাপাত ও হিমসাগর; ২৮ মে লক্ষ্মণভোগ ও লখনা; ২৫ মে ল্যাংড়া; ৬ জুন আম্রপালি; ১৬ জুন ফজলি ও সুরমা ফজলি আশ্বিনা ১ জুলাই নির্ধারণ ছিল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here