পির বলতে কী বুঝায়?
পির ফার্সি শব্দ। অভিধানে শব্দটির অর্থ করা হয়েছে- মুসলিম শিক্ষাগুরু, পুণ্যাত্মা, মহাপুরুষ, মুরুব্বী। সমাজে প্রচলিত অর্থে আধ্যাত্মিক শিক্ষাগুরুকে ‘পির’ নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে। পির শব্দটি আরবি মুর্শেদ শব্দের সমার্থক, যা পবিত্র কুরআনে উল্লোখ রয়েছে। মহান আল্লাহ্ বলেন- ‘‘আল্লাহ্ যাকে গোমরাহ করেন, আপনি কখনো তার জন্য কোনো (মুর্শেদ বা) পথপ্রদর্শনকারী অভিভাবক পাবেন না।” (সূরা আল কাহ্ফ ১৮ : আয়াত ১৭)
পারস্য দেশের সুফি সাধকগণ মুর্শেদ অর্থে পির শব্দটি ব্যবহার করতেন, যা কালক্রমে আমাদের সমাজে প্রচলিত হয়েছে। মোট কথা, পির বলতে হাদি শ্রেণীর অলী-আল্লাহ্গণকে বুঝায়।
যে সকল মহামানব গভীর সাধনার মাধ্যমে নিজের ভেতরে আল্লাহর পরিচয় পেয়েছেন, অতঃপর তা শিক্ষা দানের মাধ্যমে মানুষের সাথে আল্লাহর যোগসূত্র স্থাপন করে দিতে সক্ষম, তিনিই মুর্শেদ বা পির হওয়ার উপযুক্ত। পির হওয়ার জন্য প্রথমে অলী-আল্লাহ্ হওয়া প্রয়োজন।
মানুষকে হিদায়েত করার মতো আধ্যাত্মিক ক্ষমতাসম্পন্ন অলী-আল্লাহ্ হওয়া ব্যতীত কেউ পির দাবি করলে, সেটি ভণ্ডামী ছাড়া কিছুই নয়। আধ্যাত্মিক ক্ষমতা বা তাওয়াজ্জোহর স্তর ভেদে পির বা অলী-আল্লাহ্ চার প্রকার। যথা- ১.অলী-আল্লাহ্, ২.অলীয়ে কামেল, ৩.অলীয়ে মোকাম্মেল এবং ৪. মোজাদ্দেদে জামান।
অলী-আল্লাহ্ সম্পর্কে অশেষ দয়াময় আল্লাহ্ ওহির কিতাব পবিত্র কুরআনুল হাকিমে এরশাদ করেন-‘‘জেনে রেখো! নিশ্চয় আল্লাহর বন্ধুদের কোনো ভয় নেই এবং তাঁরা দুঃখিতও হবে না।” (সূরা ইউনুস ১০ : আয়াত ৬২)
এমনিভাবে আওলিয়ায়ে কেরামের শিরোমণি, জামানার মোজাদ্দেদ প্রসঙ্গে আল্লাহর রাসুল (সা.) এরশাদ করেন- ‘‘নিশ্চয় মহান ও মহিমান্বিত আল্লাহ্ এই উম্মতের জন্য প্রত্যেক শতাব্দীর শিরোভাগে এমন এক ব্যক্তিকে পাঠাবেন, যিনি তাদের ধর্মকে সংস্কার করে সজীব ও সতেজ করবেন। (আবু দাউদ শরীফের সূত্রে মেশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৩৬)
এই কারণে যে অলী-আল্লাহ্ (পির) যত বেশি আধ্যাত্মিক ক্ষমতার অধিকারী, তাঁর মুরিদেরা তত সহজে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে সক্ষম হয়।
আমিন, জেনে উপকৃত হলাম ।