উত্তর- মোজাদ্দেদ আরবি শব্দ, যার অর্থ সংস্কারক। মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন এ পৃথিবীতে ১ লক্ষ ২৪ হাজার নবি-রাসুল প্রেরণ করেছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই সমকালীন যুগের মানুষকে আল্লাহ্র একত্ববাদের শিক্ষা দিয়েছেন। বিশ্বনবি হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর ওফাতের পর এ পৃথিবীতে আর কোনো নবি-রাসুল আসবেন না। তাই শেষ নবি হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর প্রচারিত মোহাম্মদী ইসলাম কিয়ামত পর্যন্ত দুনিয়াতে প্রতিষ্ঠিত থাকবে। তবে এই ইসলাম ধর্মের ভিতরে নানাবিধ ভুল ভ্রান্তি ও কুসংস্কার প্রবেশ করার কারণে জগতের মানুষ সঠিক ধর্ম পালন করতে পারে না তখনই মহান আল্লাহ্ জগতের বুকে একজন মোজাদ্দেদ বা সংস্কারক প্রেরণ করে থাকেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে- “প্রতি শতাব্দীর শিরোভাগে এই উম্মতের জন্য মহান ও সম্ভ্রান্ত আল্লাহ্ একজন মোজাদ্দেদ বা সংস্কারক প্রেরণ করেন। যিনি ধর্মকে সজিব ও সতেজ করে থাকেন।” (আবু দাউদ শরীফ) মর্যাদা অনুযায়ী মোজাদ্দেদ ৩ শ্রেণির হয়ে থাকেন। যথা- হাজার বছরের মোজাদ্দেদ, পাঁচ শত বছরের মোজাদ্দেদ এবং একশত বছরের মোজাদ্দেদ।
বড়পির হযরত আবদুল কাদের জিলানি (রহ.) ছিলেন পাঁচশত বছরের মোজাদ্দেদ, হযরত শেখ আহমদ সেরহিন্দী (রহ.) ছিলেন হাজার বছরের মোজাদ্দেদ। তাঁকে মোজাদ্দেদ আলফেসানি অর্থাৎ দ্বিতীয় সহস্রের মোজাদ্দেদ বলা হয়। হযরত খাজা মঈনউদ্দিন চিশতি (রহ.) ছিলেন একশত বছরের মোজাদ্দেদ। মহান আল্লাহ্র বন্ধু এই মোজাদ্দেদগণ ধর্মে প্রবিষ্ট যাবতীয় ভুল সংশোধন করে প্রকৃত ধর্ম মানব জাতির কাছে উপস্থাপন করে থাকেন। বাংলার কৃতি সন্তান সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেব্লাজান বর্তমান জামানার মোজাদ্দেদ। ইতোমধ্যেই তিনি ধর্মের শতাধিক সংস্কার করেছেন।
প্রশ্ন: বর্তমানে পিতা-মাতার প্রতি দায়িত্ব পালনে অনেকেরই অনিহা লক্ষ্য করা যায়। এই ব্যাপারে ইসলামের বিধান জানতে চাই।
উত্তর: পিতা-মাতার অসিলায়ই পৃথিবীতে সন্তানের আবির্ভাব ঘটে। তাই ইসলামে পিতা ও মাতার প্রতি ভক্তি শ্রদ্ধা এবং তাদের সেবা যত্ন করা প্রতিটি সন্তানের জন্য ফরজ। মহান আল্লাহ্ বলেন- “তোমরা তোমাদের পিতা-মাতার প্রতি দয়া প্রদর্শন কর।”
হাদিস শরিফে আছে- ‘তোমাদের পিতা-মাতার প্রতি তোমরা সদ্ভাব রক্ষা করো। তোমার কোনো আচরণে তারা যেন ‘উহ’ শব্দটিও উচ্চারণ না করে। বর্তমান এই উন্নত প্রযুক্তির যুগে বিজ্ঞান চরম উৎকর্ষ লাভ করেছে বটে, কিন্তু শিক্ষা দীক্ষায় উন্নত অনেক ব্যক্তিদের মধ্যে বয়স্ক পিতা-মাতার প্রতি অনিহা লক্ষ্য করা যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই লক্ষ্য করা যায়- বৃদ্ধ পিতা-মাতার সেবা যত্ন ও প্রতিপালন করতে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে অনিহা রয়েছে। অথচ এই পিতা-মাতাই সন্তানকে অনেক কষ্টে শিশু বয়স থেকে লালন-পালন করে বড় করেছেন এবং উচ্চ শিক্ষা দিয়ে মানুষ করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায়, সেই সন্তান পিতা-মাতার প্রতি অবহেলা করে থাকে। পিতা-মাতার প্রতি অনিহা প্রদর্শন করা সন্তানের জন্য চরম অপরাধ ও পাপের কাজ। এমন গর্হিত পাপের কাজ যে সন্তান করে, মহান আল্লাহ্ তার জন্য পরকালে কঠিন শাস্তির বিধান রেখেছেন। সুতরাং পিতা ও মাতার ব্যাপারে ইসলামের বিধান হচ্ছে পিতা-মাতাকে প্রতিপালনসহ তাদের প্রতি সদাচরণ করা প্রতিটি সন্তানের জন্য অবশ্য কর্তব্য বা ফরজ। আমাদেরকে সর্বদা মনে রাখতে হযরত রাসুল ফরমান, “পিতা-মাতার সন্তুষ্টিতে প্রতিপালকের সন্তুষ্টি, পিতা-মাতার অসন্তুষ্টিতে প্রতিপালকের অসন্তুষ্টি।”
ধর্মের সংস্কার করা