অনলাইন ডেস্ক: বিশ্বে যুগে যুগে মহামারি এসেছে। গত শতাব্দীর শুরুতে সেই স্প্যানিশ ফ্লু এবং প্লেগের কারণে কোটি কোটি মানুষ মারা গেছেন। ১৯০৫ সালে মহাত্বা গান্ধী তখন দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে। প্লেগ রোগটি মহামারি আকারে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। মহাত্বা গান্ধী ‘ইন্ডিয়ান অপিনিয়ন’ নামে একটি প্রকাশনা বের করতেন। প্লেগের মহামারি থেকে জনসাধারণ কীভাবে রক্ষা পাবে তা নিয়ে গান্ধী একটি কলাম লিখে ফেলেন-যেটি এই করোনার যুগেও প্রাসঙ্গিক। ১৯০৫ সালের ১৬ জানুয়ারি তার কলামটি প্রকাশ পায়।
গান্ধী লিখেন, রোগের লক্ষণ দেখা দিলে তাকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। আক্রান্ত হলে ভীতি না ছড়িয়ে যে যেখানে আছেন সেখানে অবস্থান করুন। আক্রান্ত ব্যক্তির জামাকাপড় এবং অন্যান্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র জীবাণুমুক্ত করতে হবে। বাজারে যাতে জিনিসপত্রের ঘাটতি না হয় সেজন্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত মজুদ করা যাবে না। প্রতিটি ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা রাখতে হবে, এক্ষেত্রে জানালা খুলে ঘুমালে ভালো হয়। বাইরে থেকে ঘরে গিয়ে দিনের পরিধেয় কাপড় পরিষ্কার করতে হবে। মহাত্মা গান্ধী মহামারি পরিস্থিতিতে যথাসম্ভব হালকা খাবার নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বাথরুম ব্যবহার করার পর তিনি ছাই দিয়ে হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিতে বলেছেন। তিনি গরম পানির সঙ্গে সাবান এবং অন্যান্য জীবাণুনাশক মিশিয়ে ঘরের মেঝে পরিষ্কার করার পরামর্শও দেন। মহামারি চলাকালীন সময়ে গান্ধীজি এক রুমে দুই জনের বেশি শোয়ার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করে বলেছেন, রান্নাঘর, খাবার ঘর কিংবা সিঁড়ি ঘরে শোয়া বাদ দিতে হবে। এছাড়া তিনি কর্মক্ষেত্র থেকে হেঁটে বাড়ি যাবার পরামর্শ দিয়েছেন। তার মতে, এর ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
অবশ্য প্লেগ মহামারির সময় জোহানসবার্গের পুলিশ মনে করতো ভারতীয়রা অপরিষ্কার থাকে বলেই তাদের প্লেগ বেশি আক্রমণ করছে। তাদের থেকে অন্যরাও আক্রান্ত হচ্ছে। অবশ্য জোহানসবার্গ পুলিশে সেসময় যারা কাজ করে তাদের সবাই ছিল শ্বেতবর্ণের।