আশেকে রাসুল কাওসার, পটুয়াখালী জেলায় তার বাড়ি। রাজধানী ঢাকার কাকরাইলে বসবাস করেন। তিনি ২০০০ সালে যুগের ইমাম, মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী, সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহ্বুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (মা. আ.) হুজুর কেব্লাজানের কাছ থেকে হযরত রাসুল (সা.)-এর মোহাম্মদী ইসলামের সবক গ্রহণ করেন। তখন তিনি মতিঝিলের আরামবাগের একটি বাড়িতে মেসে থাকতেন।
ঘটনাটি সবক গ্রহণের কয়েক মাস পরের। মহান মোর্শেদের কাছে তরিকা নেওয়ার পর তার হৃদয়ের মাঝে আল্লাহ্ নামের জিকির যেমন জারি হয়, তেমনি সে অন্তরে পরম প্রশান্তি অনুভব করতে থাকেন। কিন্তু একদা তার মনে মহান মোর্শেদ সম্পর্কে খটকা লেগে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। শয়তানের প্ররোচনায় তিনি বিভ্রান্ত হয়ে যান যে, আল্লাহ্ ও রাসুলকে পাওয়ার জন্য মোর্শেদের দরকার নেই। মোহাম্মদী ইসলামের সত্যতার বিষয়ে আমি সন্দিহান হয়ে পড়েন। ফলে তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, আর কোনোদিন বাবে রহমতে যাবেন না। অতঃপর মহান মোর্শেদের সাথে সকল প্রকার সম্পর্ক ছিন্ন করার শপথ করেন। ঠিক তখনই তিনি আল্লাহ্ ও আল্লাহ্র রাসুল (সা.)-এর অসন্তুষ্টির শিকার হন। মুহূর্তেই তার রিজিক বন্ধ হয়ে যায়। এক অজানা কারণে তার পকেটে কোনো টাকা নেই। কোথাও খাবার পাচ্ছিল না। বাসায় গেলে তাকে জানানো হলো যে, একটু আগে সবার খাওয়া শেষ হয়ে গেছে। যার কাছে ধার চায় সেই বলে টাকা নেই। মনে হচ্ছে, কোনো কারণে অলৌকিকভাবে সবকিছু আটকে গেছে। এভাবে প্রায় ২৪ ঘন্টা তিনি অনাহারে থেকে বুঝতে পারলেন যে, ক্ষুধার কষ্ট কাকে বলে! হায়রে কপাল! তার চার পাশে তো একজন মানুষও অনাহারী কিংবা অর্ধাহারী নেই অথচ তার ভাগ্যে কোনো রিজিক জুটছে না। এদিকে তার ভিতরে অশান্তির আগুন দাউ দাউ করে জ¦লছে। উপায়ন্তর না পেয়ে ফকিরেরপুলে তার এক সাবেক রুমমেটের মেসে যান। কিন্তু সেখানেও খাবার নেই। সবাই খেয়ে চলে গেছে। তিনি ক্লান্ত শরীরে ঐ রুমমেটের খাটের উপর শুয়ে পড়েন। এ সময় তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় জ্যোতির্ময় এক মহামানবরূপে যুগের ইমাম বাবা দেওয়ানবাগীকে তিনি স্বপ্নে দেখেন। তিনি তাকে লক্ষ্য করে বললেন- ‘তুমি যদি আমার কাছে সাহায্য চাও, তবে আমি তোমাকে সাহায্য করব।’ তার তন্দ্রা ছুটে গেলো। অতঃপর তিনি তার ভুল বুঝতে পেরে মহান মোর্শেদ বাবা দেওয়ানবাগীকে স্মরণ করেন। তখন তিনি মনে মনে তওবা করে আল্লাহ্র বন্ধুর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চান এবং তাঁর সাহায্য প্রার্থনা করেন। তখনই তিনি বুঝতে পারলেন, মহান আল্লাহ্ দয়া করে তার ডাক শুনেছেন। হৃদয়টা হালকা হয়ে গেল। হঠাৎ করেই হৃদয় মাঝে পরম শান্তি অণুভব করলেন। ঠিক ঐ মুহূর্তেই বিজয়নগর থেকে তার এক বন্ধুসম বড়ো ভাই ফোন করে তাকে দাওয়াত করেন এবং তৎক্ষণাৎ তার সাথে সাক্ষাৎ করতে অনুরোধ করেন। তিনি ঘটনা স্থলে পৌঁছতেই তিনি পূর্বাপর কোনো কিছু জিজ্ঞেস না করে তাকে নিয়ে এক চাইনিজ রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করেন এবং বলেন- ‘চল, আগে খেয়ে নেই। তারপর কথা বলব।’ তিনি তখন মহান মুর্শেদের অপার দয়ায় তৃপ্তি সহকারে খেলেন। সেই থেকে অদ্যাবধি মহান আল্লাহ্ ও তাঁর বন্ধুর অপার দয়ায় তিনি খুব ভালো আছেন। আর কখনো খাবারের সংকটে পড়তে হয়নি।
আমিন, মহান মালিকের দরবারে শুকুরিয়া,