নারী ও শিশু ডেস্ক: প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ৩টি শিশুর মধ্যে ২টি শিশুর পরিবারই চরম খাদ্য সংকটে আছে। বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্যা চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের এক জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি এই তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। জরিপটি চালিয়েছে সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের চাইল্ড রাইটস গভর্ন্যান্স ও চাইল্ড প্রোটেকশন সেক্টর।
জরিপে বলা হয়, শহরের বস্তি, চা বাগান এবং সুবিধা বঞ্চিত গ্রামাঞ্চলের ১০-১৮ বছর বয়সী ১২১ জন শিশুর সঙ্গে ফোনে কথা বলে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগ্রহ করা তথ্য বলছে, উপার্জনক্ষম সদস্যরা আয়ের সুযোগ হারাতে থাকায় পরিবারের খাদ্য সুরক্ষা পরিস্থিতি একটি সংকটময় পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই ১২১ জনের মধ্যে ৪০ শতাংশ ছেলে ও ৬০ শতাংশ মেয়ে, আছে প্রতিবন্ধী শিশুও।
সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, জরিপের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুদের ওপর কোভিড-১৯ সংকটের প্রভাব উন্মোচন করা এবং বিরূপ প্রভাবকে হ্রাস করার জন্য সরকারি সংস্থা ও এনজিওর কৌশল এবং কার্যক্রমকে শক্তিশালী করা। এই শিশুদের মধ্যে বেশিরভাগই সরকার বা কোনও বেসরকারি সংস্থা থেকে সাহায্য পায়নি বলে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। এই তথ্য থেকে অনুমান করা যায় যে, সাধারণ খাদ্য বিতরণসহ সাম্প্রতিক সময়ে সরকার ঘোষিত উদ্যোগগুলো সংখ্যাগরিষ্ঠের কাছে পৌঁছায়নি এবং বেসরকারি উদ্যোগগুলোও অপর্যাপ্ত।
সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের শিশু সুরক্ষা ও শিশু অধিকার পরিচালনা সেক্টরের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “এই সংকটটি শিশুদের শারীরিক এবং মনো-সামাজিক সুস্থতার ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলছে। আমরা এই সংকট সম্পর্কে জানতে সবচেয়ে প্রান্তিক শিশুদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি, এই জরিপটি শিশুদের ওপর বিরূপ প্রভাব দূরীকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকার এবং নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।’’
জরিপের ২০টি প্রশ্ন থেকে জানা যায়, ৯০ শতাংশ শিশুকে স্কুল থেকে লেখাপড়ার কোনও খোঁজ নেওয়া হয়নি, ৯১ শতাংশের বাড়িতে পড়াশোনায় সাহায্য করার মতো কেউ নেই এবং ২৩ শতাংশ বাসায় একেবারেই লেখাপড়া করছে না। সাধারণত যে শিশুরা বাড়িতে লাঞ্ছনার মুখোমুখি হয়, তাদের মধ্যে ২১ শতাংশ কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে-এ ধরনের শাস্তি বেড়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেছে। অন্যদিকে, শারীরিক শাস্তির ক্ষেত্রে এটি ৪৭ শতাংশ বেড়ে গেছে।