উন্নত ওষুধ তৈরিতে বড় ভূমিকার স্বীকৃতি

উন্নত ওষুধ তৈরিতে বড় ভূমিকার স্বীকৃতি

দেওয়ানবাগ ডেস্ক: এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্টের কে. ব্যারি শার্পলেস, ক্যারোলিন আর বার্তোজি এবং ডেনমার্কের মর্টেন মেলডান। ক্লিক রসায়ন ও বায়োর্থোগোনাল রসায়ন উন্নয়নে অবদানের জন্য তাঁদের এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। তিনজনই পৃথকভাবে ক্লিক রসায়ন নিয়ে কাজ করেছেন। ওষুধ তৈরিতে তাঁদের গবেষণা ভূমিকা রেখেছে।

ক্লিক রসায়ন হলো অণুগুলোকে জীবন্ত কোষের মধ্যে থাকা অণুর মতো করে সংযুক্ত করা। রয়াল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস বলেছে, বিজ্ঞানী শার্পলেস এবং মেলডান ক্লিক রসায়নের ভিত্তি স্থাপন করেছেন, যা কিনা রসায়নের একটি পয়োগিক রূপ। অন্যদিকে বার্তোজি রসায়নের এ ধারাকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে গিয়ে জীবন্ত কোষে এর ব্যবহার শুর“ করেছেন।

আর জীবন্ত কোষে ক্লিক রসায়নের ব্যবহারকেই বলা হয় বায়োর্থোগোনাল রসায়ন।

রয়াল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস আরো জানিয়েছে, অণুকে একত্রে যুক্ত করার ক্ষেত্রে ওষুধ পস্তুতকারীদের ভাবনায় নতুন বিপ্লব এনেছে এই গবেষকদের কাজ। অন্যান্য ব্যবহারের পাশাপাশি ওষুধ তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে ক্লিক রসায়ন। এ উদ্ভাবন মানুষের শরীরে ওষুধের পার্শ্বপতিক্রিয়া আরো কমিয়ে আনবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে ক্যান্সার চিকিৎসায় বিশেষ অবদান রাখতে পারে এ গবেষণা। ডিএনএ ম্যাপিং এবং দরকারি ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক উপকরণ তৈরির কাজে এই রাসায়নিক বিক্রিয়াটির বহুল ব্যবহার হচ্ছে বিশ্বে।

বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে ৪টায় এই তিনজনের পুরস্কারের জয়ের ঘোষণা দেন একাডেমি অব সায়েন্সেসের সেক্রেটারি জেনারেল হান্স এলেগেন।

ব্যারি শার্পলেস দ্বিতীয়বারের মতো নোবেল পুরস্কার পেলেন। ২০০১ সালে পথমবার এই পুরস্কার জেতেন তিনি। ইতিহাসে পঞ্চম ব্যক্তি হিসেবে দুটি নোবেল জিতলেন শার্পলেস।

কে. ব্যারি শার্পলেস ১৯৪১ সালে যুক্তরাষ্টের ফিলাডেলফিয়ায় জন্মগহণ করেন। তিনি স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৬৮ সালে পিএইচডি লাভ করেন। শার্পলেস ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি ও স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেছেন। ১৯৯০ সাল থেকে যুক্তরাষ্টের স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউটে রসায়ন বিষয়ে ডাব্লিউ এম কেক অধ্যাপক হিসেবে নিয়োজিত।

ক্যারোলিন আর. বার্তোজি ১৯৬৬ সালে যুক্তরাষ্টে জন্মগহণ করেন। ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি বার্কলে থেকে তিনি পিএইচডি অর্জন করেন। বর্তমানে বার্তোজি স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে অ‍্যান টি এবং রবার্ট এম বাস স্ট্যানফোর্ড অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।

মর্টেন মেলডালের জন্ম ১৯৫৪ সালে ডেনমার্কে। টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি ১৯৮৬ সালে পিএইচডি লাভ করেন। বর্তমানে কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন।

নোবেল পুরস্কার পচলনের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১১৪ বার রসায়নে নোবেল দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত মাত্র দুজন দুইবার রসায়নে নোবেল পেলেন। এর আগে বিটিশ জৈব রসায়নবিদ ফ্রেডেরিক স্যাঞ্জার ১৯৫৮ ও ১৯৮০ সালে রসায়নে নোবেল জেতেন।

আগামী ১০ ডিসেম্বর নোবেল পুরস্কারের জনক সুইডিশ বিজ্ঞানী ও শিল্পপতি আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে স্টকহোম ও অসলোতে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সব বিজয়ীর হাতে পইজমানি হিসেবে এক কোটি সুইডিশ ক্রোনারের চেক, মানপত্র ও স্বর্ণপদক দেওয়া হবে।

ক্যারোলিন আর. বার্তোজিকে স্থানীয় সময় গভীর রাতে নোবেল জয়ের খবর দেওয়া হয়েছিল। এ কথা শুনে নিজের পতিক্রিয়ায় তিনি জানান, ‘আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।’

মার্কিন এই অধ্যাপক বলেন, ‘তাঁর কাজ নতুন ধরনের অণু আবিষ্কার করতে ব্যবহার করা হচ্ছে। যেগুলোর অস্তিত্ব আছে বলে আমরা জানতাম না। এর মাধ্যমে রোগীদের শরীরের সঠিক স্থানে ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *