খেলতে খেলতে শিশুদের শিক্ষা ও মানসিক বিকাশ

খেলতে খেলতে শিশুদের শিক্ষা ও মানসিক বিকাশ

দেওয়ানবাগ ডেস্ক: কাগজ কেটে কেউ নকশা করছে। আবার কেউ বা মাটি দিয়ে বানাচ্ছে খেলনা। ছবি আঁকতে গিয়ে কারো মুখে-জামায় লেগে যাচ্ছে রং। তার পাশে দোলনায় দোল খাচ্ছে কয়েকজন।
তা দেখে খিলখিল হাসিতে গড়াগড়ি যাচ্ছে শিশুরা। চার বছরের এক শিশুর কণ্ঠ থেকে ভেসে এলো- ‘আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী’। সেই গানের সুরে তাল মেলাল অন্য শিশুরা।
সম্প্রতি রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে গিয়ে দেখা গেল একঝাঁক শিশুর এমন আনন্দময় চিত্র। ‘খেলার জগৎ গড়ি’ শীর্ষক বর্ণিল এই আয়োজন এবং ‘পে ল্যাব মডেল’ উপস্থাপন করে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্ট (ব্র্যাক আইইডি)। আর ওই আয়োজনে অংশ নিয়ে শিশুরা মেতে ওঠে এমন নির্মল আনন্দে।

ব্র্যাকের ৫০তম এবং প্রাক-শৈশব উন্নয়ন কার্যক্রমে ব্র্যাকের অন্যতম প্রধান অংশীদার লেগো ফাউন্ডেশনের ৯০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গত বছরের শুরু থেকে ‘খেলার জগৎ গড়ি’ শীর্ষক বিশেষ ক্যাম্পেইন শুরু করে ব্র্যাক। ক্যাম্পেইনের শেষাংশে ‘পে ল্যাব মডেল’-এর কার্যক্রম উপস্থাপন করা হয়। এ আয়োজনে শিশুদের আঁকা ছবি, হাতে বানানো খেলনা ও খেলার উপকরণ প্রদর্শন করা হয়।
ব্র্যাক আইইডির সিনিয়র প্রগ্রাম স্পেশালিস্ট নাদিয়া হোসেন বলেন, ‘পে ল্যাব মডেলের মূল উদ্দেশ্য খেলার মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা ও মানসিক বিকাশ সাধন করা। এতে শিশুরা পরে যখন স্কুলে ভর্তি হবে তখন তাদের স্কুলভীতি থাকবে না। স্কুলে যেতে শুরু করার আগেই তারা খেলতে খেলতে অনেক কিছু শিখে ফেলছে।’
তিনি জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় একটি কক্ষে স্থানীয় চার-পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের নিয়ে এই পে ল্যাব কর্মসূচি পরিচালিত হয়েছে।
রাজধানীর মাদারটেক এলাকার বাসিন্দা গৃহিণী রানু আক্তার। সেই আয়োজনে তিনি তাঁর সাড়ে তিন বছর বয়সী মেয়ে আমেনাকে নিয়ে আসেন। ভবিষ্যতে মেয়েকে শিক্ষিকা বানানোর স্বপ্ন তাঁর। তিনি বলেন, ‘ব্র্যাকের খেলার জগৎ স্কুলে আমার মেয়ে কোনো খরচ ছাড়াই ছড়া বলা, রং করাসহ বিভিন্ন খেলা শিখছে। এতে আমার মেয়ের মানসিক বিকাশ ওর বয়সী অন্য শিশুদের তুলনায় বেশি।’

ব্র্যাকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ, উগান্ডা ও তানজানিয়ায় ৬৫৬টি পে ল্যাব পরিচালনা করছে ব্র্যাক। এর মাধ্যমে এক থেকে পাঁচ বছর বয়সী ১১ হাজার ৫০০ শিশুকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে এ কার্যক্রমের প্রসার ঘটানো হয়েছে। এ পর্যন্ত ৯টি জেলার ৩২টি উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪০০টি পে ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। চার-পাঁচ বছর বয়সী প্রায় ১২ হাজার শিশু এসব পে ল্যাবে খেলার মাধ্যমে শেখার সুযোগ লাভ করেছে।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *