কুমিল্লার কৃষিতে নতুন হাওয়া

কুমিল্লার কৃষিতে নতুন হাওয়া

কুমিল্লা সংবাদদাতা: কুমিল্লার কৃষিতে দ্যুতি ছড়াচ্ছেন তরুণ কর্মকর্তারা। অফিস টাইম ছাড়াও তারা মাঠে ছুটছেন। এতে মাঠ থেকে ভালো সাফল্যও আসছে। ধান, আলু, সরিষা, টমেটো, কুমড়া আর লাউয়ে ভরে উঠছে কৃষকের জমি। কুমিল্লার ১৭ উপজেলার মাঠে কৃষকদের পরামর্শ ও উৎসাহদিতে তাদের দেখা যায়। তারা হয়ে উঠেছেন মাঠের কিষান-কিষানির কাছে প্রিয়জন। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা। এখানে ড্রাগন, মাল্টা, তিল, সরিষাসহ নতুন জাতের ধান চাষ হচ্ছে। মাঠের কর্মকর্তারা বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে কৃষি ক্লিনিক চালু করেছেন। কৃষককে তার প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রেসক্রিপশন প্যাডে লিখে দিচ্ছেন। এছাড়া নিমের পাতার রস আর মেহগনির বীজের রস দিয়ে কৃষকদের পোকা তাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। কৃষক তা ব্যবহার করে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করছেন। কিংবা কেঁচো সার উৎপাদনে পরামর্শ দিচ্ছেন। তরুণ উপজেলা কৃষি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) বানিন রায় জানান, শুধু চাকরিতে আনন্দ নেই। দেশের জন্য মানুষের জন্য কাজে আনন্দ আছে। সেই আনন্দের জন্যই স্যারদের পরামর্শ নিয়ে মাঠে ছুটছি।

বরুড়া উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়ন। এখানে জেলার সবচেয়ে বেশি কচুরলতি উৎপাদন হয়। এই এলাকায় দিন দিন বাড়ছে লতি উৎপাদন। এছাড়া এই এলাকায় রাস্তার পাশে নিজ খরচে সবজি উৎপাদন করা, তাল বীজ লাগানোসহ নতুন প্রযুক্তি প্রচারে কাজ করছেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার ভুইয়া। তিনি বলেন, লতি চাষে কৃষকদের প্রশিক্ষণ, বিনামূল্যে সার বীজ দিয়ে প্রদর্শনীর মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এছাড়া বিষমুক্ত লতি উৎপাদনে সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ দেওয়া হচ্ছে। সদর দক্ষিণ উপজেলার কালির বাজার ব্লক। জেলার ব্যতিক্রম সব ফসল এখানে বেশি উৎপাদন হয়। এখানে উপ-সহকারী কর্মঠ দেখে জেলার বিভিন্ন প্রদর্শনীও বেশি আসে বলে জানা গেছে। হলুদ তরমুজ থেকে শুরু করে নতুন প্রজাতির আখ এখানে চাষ হয়। সকাল থেকে সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়ি আর মাঠে মাঠ কর্মকর্তাকে ঘুরতে দেখা যায়। এখানকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাহিদা খাতুন বলেন, জমি আর কৃষকই আমার সংসার। মাঠে না এলে সময় কাটতে চায় না। মাঝে মাঝে ছুটিরদিনেও মাঠে চলে আসি। ফসলের মায়া বড় মায়া। এরকম সদর দক্ষিণ উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুল বাশার চৌধুরীও ছুটছেন লালমাই পাহাড়ে কচু, কফি, কাজুবাদাম চাষ নিয়ে। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার রামপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোছা. সুলতানা ইয়াসমিনকে কৃষককে পরামর্শ দিতে জমির আইলে ঘুরতে দেখা যায়।

কৃষি সংগঠক মতিন সৈকত বলেন, শিক্ষা ও কৃষি ছাড়া বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। সবক্ষেত্রেই ভালোমন্দ রয়েছে। তবে কৃষিতে অভিজ্ঞদের সঙ্গে তরুণ কর্মকর্তারা ভালো ভূমিকা রাখছেন। তারা চাকরির বাইরেও আনন্দের জন্য কাজ করছেন। এরকম কর্মকর্তার সংখ্যা বাড়লে দেশ আরও এগিয়ে যাবে।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *