দ্রোহীচেতা কবি সুকান্ত

দ্রোহীচেতা কবি সুকান্ত

ঔপন্যাসিক মনীন্দ্রলাল বসুর ‘রমলা’ উপন্যাসের প্রধান চরিত্রের নামেই রাখা হয়েছিল তাঁর নাম। নামটি রেখেছিলেন তাঁর জ্যাঠাতো বোন রাণী। ‘রমলা’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র সুকান্তের নামেই আদরের ভাইটির নাম ‘সুকান্ত’ রেখেছিলেন বড় বোন রাণী। ‘রমলা’ খ্যাত সাহিত্যিক মনীন্দ্রলাল বসুর এক গল্পের মতোই তিনি নিজেকে ‘আমি এক দুর্ভিক্ষের কবি’- বলে প্রকাশ করেছেন।

রাণী দিদির উৎসাহেই লেখালেখিতে সুকান্তের হাতেখড়ি। শৈশবে সুকান্ত রাণীদির কাছেই প্রথম কবিতার পাঠ শেখেন। সুকান্ত ভট্টাচার্য সাহিত্যের পরিবেশ পেয়ে যান পারিবারিক পরিমণ্ডল থেকেই। স্কুলের ছাত্র হিসেবে ভালো মার্কস পাওয়া মেধাবী ছাত্র হওয়ার নজির ছিল না সুকান্তের! সাধারণ মানের ছাত্র ছিলেন তিনি। তাই লেখাপড়ায় খুব একটা আগ্রহ দেখাতেন না। কৈশোর থেকেই সুকান্ত যুক্ত হয়েছিলেন সাম্যবাদী রাজনীতির সঙ্গে। যে আকাক্সিক্ষত স্বাধীনতা দেখার জন্য নিজের ক্ষুদ্র জীবনের সব স্বপ্নকে বেঁধেছিলেন বিপ্ল¬বের বন্ধনে, তা তিনি দেখে যেতে পারেননি স্বল্পায়ু জীবনে জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ায়। তবুও তা দেখেছে ভারতবর্ষসহ বিশ্ববাসী। পরাধীন দেশের দুঃখ, দুর্দশাজনিত বেদনা এবং শোষণমুক্ত স্বাধীন সমাজের স্বপ্ন, শোষিত মানুষের কর্মজীবন এবং ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য সংগ্রাম তাঁর কবিতার মূল প্রেরণা।

কবিতা আর বিপ্লব এই এক জোড়া শালিক তাঁর রক্তের ভেতর ধুমিয়ে আলোবাদ্যির উৎসব জাগিয়েছিল। সময় কারো কাছে মাটির গভীরে উদ্ভিদের শেকড় ছড়ানোর মতো ধীর ও নিঃশব্দ। কিন্তু কারো কারো কাছে সময় দেখা দেয় ঝড়-বিজলি-বারুদের তীব্রতা আর গতি নিয়ে। সুকান্ত ভট্টাচার্য তাঁর সময়কে সে রকম তীব্রতাতেই পেয়েছিলেন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ চলছে, বাংলার দুর্ভিক্ষে লাখ লাখ নর-নারী-শিশুর মৃত্যু সইতে হচ্ছে, ওদিকে ছড়িয়ে পড়ছে ব্রিটিশবিরোধী ভারত ছাড় আন্দোলনের ঢেউ। চলছে তেভাগা আন্দোলন, ঘটছে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা, দেশ বিভাগের ধাক্কায় মানচিত্র কাঁপছে, মানুষ কাঁপছে, সমাজ ভাঙছে। সেই ভাঙা-গড়ার মধ্যে কবির হৃদয় স্থির থাকতে পারেনি এক মুহূর্তেও। তাই কবিতায় লিখে যান তিনি বিপ্লবের রক্তমাখা ইতিহাস!
তিনি লিখে যান সময়ের প্রতিচ্ছবি।

‘ততদিন প্রাণ দেব শত্রুর হাতে/মুক্তির ফুল ফুটবে সে সংঘাতে।
ইতিহাস! নেই অমরত্বের লোভ/আজ রেখে যাই আজকের বিক্ষোভ’।
(কবিতা-বিক্ষোভ, কাব্যগ্রন্থ: ঘুম নেই)
বিস্ময়ভরা মায়াজড়ানো চেহারা ছিল কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের। কবির চেহারা বুঝি এমন হয়? গালে হাত দিয়ে বসে, হাসি হাসি মুখ। ঠোঁটের ওপরে সদ্য গোঁফ ওঠা কালো রেখা। সুকান্তের এছাড়া আর কোনো ছবি চোখে পড়েনি কখনো। তাঁকে চিনতে তাই সেই বিষন্ন হাসিমাখা মুখের দিকেই তাকাতে হয়। কিন্তু সেই মুখের গভীরে যেন আরও কার কার মুখচ্ছবি ভাসে। সেটা ছিল ক্ষুদিরাম-সূর্যসেনদের শহীদ হওয়ার যুগ। সেটা ছিল কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী উত্থানের যুগ, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ফেরার হওয়ার যুগ। চিরকালের বিপ্ল¬বীরা, চিরকালের শহীদরা বুঝি এমনই হন। তাঁদের মুখে শান্ত, কোমল, অপাপবিদ্ধ সংকল্পের ছায়া। বুকের আগুনে সময়কে তাঁরা আরও শুদ্ধ করে দিয়ে যান।
তাই তিনি লেখেন,
‘অবাক পৃথিবী! অবাক করলে তুমি!
জন্মেই দেখি ক্ষুব্ধ স্বদেশভূমি।
বিদ্রোহ আজ বিদ্রোহ চারিদিকে
আমি যাই তারি দিন-পঞ্জিকা লিখে,’
(কবিতা-অনুভব, কাব্যগ্রন্থ: ছাড়পত্র)।
সুকান্ত ভট্টাচার্য এক বিদ্রোহী কবির নাম। বুর্জোয়া রাজনীতির প্রভাব বলয় ভেঙে নতুন সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে নিবেদিত কবি সুকান্ত আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন, সমাজচেতনা ও মূল্যবোধ জাগরণে নিবেদিত থেকেছেন সারাজীবন। স্বল্পায়ু কবি এই পৃথিবীতে চলমান ঘটনা আর রাজনীতিতে সচেতন ছিলেন। কাব্যচর্চার সময় খুব দীর্ঘ ছিল না। তাঁর কবিতা পাঠকের আগ্রহ সঞ্চার করেছে। গবেষকরা নতুন দিক ও বিষয়কে আবিষ্কার করেছেন। কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যায়নি তাঁর কবিতা। প্রতিনিয়ত সুষমা ও ব্যঞ্জনায় পুষ্ট হয়ে মাধুর্যমণ্ডিত হয়েছে। তিরিশের কবিদের কাব্যশক্তি পাঠককে আকৃষ্ট করেছিল। চল্লিশে সুকান্তের কবিতায় উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। তিরিশের কবিরা মানবিক মূল্যবোধ ও আশা-নিরাশার দোলাচলে আন্দোলিত হয়ে কবিতাকে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেছেন। কিন্তু সুকান্ত কবিতার জগতে প্রবেশ করে জীবনের সুন্দর দিক, পৃথিবীর রূপ-রহস্য ও মানবিক কল্যাণ বন্দনায় নিজেকে ব্যাপৃত রেখেছিলেন। জীবন-দর্শনজাত তাঁর কবিতায় ব্যঙ্গ বিদ্রুপ, দেশীয় ঐতিহ্য ও সমাজ চেতনার উপস্থিতি লক্ষণীয়। সুকান্ত একটি আধুনিক কাব্য ভাষার সৃষ্টি করেছেন। চল্লিশের অন্য কবিদের থেকে তার স্বতন্ত্রতা তিনি গণমানুষের মুক্তি প্রণোদনা সৃষ্টিতে মগ্ন ছিলেন। তাঁর প্রতিবাদী কণ্ঠ সমকাল ও ইতিহাসকে বন্দি করে রেখেছে।

সুকান্ত চেয়েছেন বিদ্রোহ, চেয়েছেন এই সমাজ সংসারের খোল ও নলচে একত্রে বদলানোর দিন। মাত্র বিশ বছর দশ মাস বয়সে জরজর দেহ ফেলে চলে গেলেও অমর হয়ে গেছে তাঁর কবিতা। তাঁর আর ক্ষয় নেই। তাঁকে পাঠ করে সেই অবিনাশী আগুনের ছোঁয়া পাই আমরা। সেই আগুন যুগে যুগে জনপুঞ্জের ভেতর থেকে একটি একটি তরুণকে ইতিহাস ডাক পাঠায় আলোকপুঞ্জে। কেননা, তরুণই প্রথম টের পায় তার মুক্তিকে আটকে রাখে অন্যায়-অসম ব্যবস্থা। এখনো তরুণের মুখেই নায়কের আভা খোঁজে আমাদের সমাজ। তাই ইতিহাসের তরঙ্গ ক্ষুদিরাম, সূর্যসেন, নজরুল, সুকান্তদের তুলে নিয়ে যায়। তরুণের প্রাণের দাম ছাড়া পরিবর্তন আর সৃষ্টির বীজ কোথায় কবে রোপিত হয়েছে?

সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার চাঞ্চল্য ও উত্তেজনা তাই কেবল তাঁর মনের চাঞ্চল্য নয়, সেটা তাঁর সময়েরই উত্তেজনা। তাঁর বয়সের বিবেচনা এখানে প্রধান নয়। ব্রিটিশবিরোধী বিদ্রোহের পটভূমিতে যেমন নজরুল তাঁর ‘বিদ্রোহী’ কবিতা লেখেন, তেমনি সুকান্ত লেখেন তাঁর ছাড়পত্র, আগ্নেয়গিরি, হে পৃথিবী, হে মহাজীবন-এর মতো কবিতা। দুর্ভিক্ষ পীড়িত বাংলায় অভূতপূর্ব তাঁর সেই উপমা ‘পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’। ক্ষুধিত পাষাণ হয়ে যাওয়া মানুষের মনে এই কবিতা কেবল কবিতা নয়, প্রচণ্ড ক্ষোভ আর প্রতিবাদ থেকে উঠে আসা সত্যভাষণ। সুকান্ত তাই নিছক কবি নন, সময়ের কবি। কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় সুকান্তের মধ্যে দেখেছেন প্রতিশ্রুতি আর কবি বিষ্ণু দে দেখেছেন পরিণতি। কিন্তু যে জীবনাবেগ তাঁর কবিতার মধ্যে শরীরের ভেতর শিরা-উপশিরার মতো বইছিল তাকে পরিণতি আর প্রতিশ্রুতি দিয়ে বোঝা যাবে না, তা ঘটনা।

সুকান্তের কবিতা সব ধরনের বাধা-বিপত্তিকে জয় করতে শেখায়। যাপিত জীবনের দুঃখ-যন্ত্রণাকে মোকাবিলা করার সাহস তাঁর কবিতা থেকে পাওয়া যায়। তারুণ্যের শক্তি দিয়ে উন্নত শিরে মানুষের মর্যাদার জন্য মানুষকে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান সুকান্তের কবিতায় লক্ষণীয়। সুকান্তের কবিতা সাহসী করে, উদ্দীপ্ত করে। তাঁর বক্তব্যপ্রধান সাম্যবাদী রচনা মানুষকে জীবনের সন্ধান বলে দেয়। সুকান্ত ভট্টাচার্য অগ্নিময় এক কবিপুরুষ। তাঁর কবিতার ভুবন বিদ্রোহের আগুনে ঝলসানো। মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁর কণ্ঠ ছিল উচ্চকিত। সুকান্ত ছিলেন উচ্চতর মানবিকবোধে আক্রান্ত কবি। তিনি তার অগ্নিদীপ্ত সৃষ্টি প্রণোদনা দিয়ে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে প্রয়াসী ছিলেন। বালক বয়সে তিনি ভাবনার বৈতরণীতে অনেক বেশি অগ্রসর হয়েছিলেন। সুকান্তকে বলা হয় গণমানুষের কবি, সাম্যের কবি, দ্রোহের কবি, বিপ্ল¬বের কবি। অসহায়-নিপীড়িত সর্বহারা মানুষের সুখ, দুঃখ তাঁর কবিতার প্রধান বিষয়।

সুকান্ত তাঁর কবিতার মাধ্যমে মেহনতি মানুষের কাছে যুদ্ধের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর কবিতা শক্তি জুগিয়েছে। যাবতীয় শোষণ-বঞ্চনার বিপক্ষে সুকান্তের ছিল দৃঢ় অবস্থান। তিনি তাঁর কবিতার নিপুণ কর্মে দূর করতে চেয়েছেন শ্রেণি
বৈষম্য। তিনি শ্রেণিবৈষম্যের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। অবহেলিত মানুষের অধিকার আদায়ের স্বার্থে ধনী মহাজন অত্যাচারী প্রভুদের বিরুদ্ধে নজরুলের মতো সুকান্তও ছিলেন সক্রিয়। মানুষের সমঅধিকার বাস্তবায়নের জন্য তিনি নিরলস কাজ করেছেন। তিনি ছিলেন অনুভূতিপ্রবণ কবি। মানবতার জয়ের জন্য তিনি লড়াকু ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। অসহায় মানুষের প্রতি তার সহমর্মিতা ছিল বিশাল। সুকান্তের কবিতা অধিকার অর্জনের আন্দোলনকে গতিময় করতে সহায়ক হয়েছে। শ্রমজীবী মানুষের দাবিয়ে রাখার ষড়যন্ত্রকে তিনি কবিতার উচ্চারণ দিয়ে রুখতে চেয়েছেন। তিনি তাঁর কবিতার মধ্যদিয়ে শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির পথ দেখিয়েছেন।

তিনি দ্বিধাহীনভাবে উচ্চারণ করেছেন-
‘তৈরি হোক লাল আগুনে ঝলসানো আমাদের খাদ্য।
শিকলের দাগ ঢেকে দিয়ে গজিয়ে উঠুক
সিংহের কেশর প্রত্যেকের ঘাড়ে’।
(কবিতা-১লা মে-র কবিতা ’৪৬, কাব্যগ্রন্থ: ঘুম নেই)

মার্কসবাদী চেতনায় আস্থাশীল কবি হিসেবে সুকান্ত ভট্টাচার্য কবিতা লিখে বাংলা সাহিত্যে স্বতন্ত্র স্থান করে নেন। তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী লেখক ও শিল্পীসংঘের পক্ষে ‘আকাল’ (১৯৪৪) নামে একটি কাব্যগ্রন্থ সম্পাদনা করেন। মানবিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য বাংলা কাব্যধারার প্রচলিত প্রেক্ষাপটকে আমূল বদলে দিতে পেরেছিলেন। তাঁর কবিতা, গান, নাটক সব রচনার ছন্দে ছন্দে ছিল বিদ্রোহের স্ফুলিঙ্গ। সুকান্তের জীবদ্দশায় তাঁর কোনো গ্রন্থ প্রকাশিত হয়নি। তাঁর রচনাবলির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো: কাব্যগ্রন্থ- ‘ছাড়পত্র’ (১৩৫৪), ‘ঘুম নেই’ (১৩৫৭), ‘পূর্বাভাস’ (১৩৫৭)। ছড়ার বই ‘মিঠে কড়া’ (১৩৫৮), দু’টি নাটিকা সংকলন ‘অভিযান’, ‘হরতাল’ গল্পের বই, ‘গীতিগুচ্ছ’ গানের বই ইত্যাদি। পরবর্তীকালে উভয় বাংলা থেকে ‘সুকান্ত সমগ্র’ নামে তাঁর রচনাবলি প্রকাশিত হয়। সুকান্ত তাঁর বয়সিক সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করেছেন তাঁর পরিণত ভাবনায়। ভাবনাগত দিকে তিনি তাঁর বয়স থেকে অনেক বেশি এগিয়ে ছিলেন। সুকান্তের কবিতা বিষয়বৈচিত্র্যে ও লৈখিক দক্ষতায় অনন্য। তাঁর সংগ্রামী চিন্তাধারার প্রতিফলন ঘটিয়েছিলেন তাঁর অবিস্মরণীয় সাহিত্য-সৃষ্টির মাধ্যমে।
প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলেছেন-
‘আদিম হিংস্র মানবিকতার যদি আমি কেউ হই
স্বজনহারানো শ্মশানে তোদের
চিতা আমি তুলবোই’।
(কবিতা-বোধন, কাব্যগ্রন্থ: ছাড়পত্র)

বাংলা সাহিত্যে সুকান্তের আবির্ভাব একটি ঘটনা যা একবারই কেবল ঘটে। সুকান্ত বিদ্রোহের বাণীতে বদলে দিয়েছিলেন বাংলা কবিতাকে। গণমানুষের মগজে ক্ষুদ্র জীবনেও তিনি সৃষ্টি করেছিলেন আলোড়ন। তবে তাঁকে জীবনের সাথে মৃত্যুর বাধ্যবাধকতায় অকপটে বরণ করে নিতে হয়েছে মৃত্যুকে। তাঁর জীবনের কাছে পাওয়া শ্রেষ্ঠ পুরস্কার: বিস্ময়কর অকাল মৃত্যু! রোগে ভুগে, যেন পুড়ে পুড়ে শেষ হলো একটি অগ্নিলাভার জীবন, পরিসমাপ্তি ঘটলো দ্রোহের আলোকিত জীবনের।
১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট জন্মে; ১৯৪৭ সালের ১৩ মে মাত্র ২১ বছর বয়সে মৃত্যু স্পর্শ করলো তাঁকে। অথচ কী আশ্চর্য, মৃত্যুদিনে তাঁর প্রিয় শহর কলকাতায় চলছিল দাঙ্গা। যে কলকাতায় তিনি কখনো রাজপথে মুখরিত হয়েছেন স্লোগানে কখনো বিপ্ল¬বের ঝাণ্ডা হাতে উচ্চারণ করেছেন দ্রোহের বাণী। কলম হাতে রচেছেন পরাধীনতা থেকে মুক্ত হবার দ্রোহীচেতা কালসচেতন উচ্চারণ। বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্র-নজরুল পরবর্তী পর্যায়ে সুকান্তের আবির্ভাব স্মরণীয়। কবিতার বিষয় ও বক্তব্যের বহুমাত্রিকতায় একটি নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েই তিনি বাঙালির হৃদয়ে আসীন হয়ে আছেন সাম্যবাদী চেতনার দ্রোহীচেতা কবি হিসেবে।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *