ব্যাংকিং খাতে তারল্য প্রবাহ কমছে

ব্যাংকিং খাতে তারল্য প্রবাহ কমছে

অর্থনৈতিক ডেস্ক: ব্যাংকিং খাতে তারল্য প্রবাহ কমে গেছে। তারল্য পরিস্থিতি মেটাতে ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিশেষ তারল্য সুবিধা নিতে হচ্ছে। একই সঙ্গে কলমানি থেকেও ধার করার প্রবণতা বেড়েছে। এতে কলমানির সুদের হার বেড়ে গেছে। ব্যাংকিং খাতে ঋণের প্রবাহ বৃদ্ধি, আমানত প্রবাহ কমা, জীবনযাত্রার চাহিদা মেটাতে ব্যাংক থেকে সঞ্চয় তুলে নেওয়া, রেমিট্যান্স প্রবাহ কমা ও ডলার সংকট মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে ডলার কেনা-এই পাঁচ কারণে তারল্য সংকট বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে উঠে আসে, ব্যাংকগুলোতে যেখানে তারল্য প্রবাহ বাড়ার কথা সেখানে গত এক বছরে তা কমেছে। গত বছরের জুনে ব্যাংকিং খাতে মোট তারল্য ছিল ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। গত জুনে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এক বছরে তারল্য কমছে ৯ হাজার কোটি টাকা। মোট তারল্যের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বিধিবদ্ধ জমা হিসাবে রাখা হয়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা। বাকি ২ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত তারল্য হিসাবে ব্যাংকে পড়ে রয়েছে। এক বছর আগে এই অতিরিক্ত তারল্য ছিল আড়াই লাখ কোটি টাকা। এক বছরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত তারল্য কমেছে।

গত বছর থেকে আমানত কমছে। গত বছরের জুলাইয়ে আমানত বেড়েছিল ১৩ দশমিক ১৬ শতাংশ। গত জুলাইয়ে বেড়েছে সাড়ে ৮ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে আমানতের প্রবৃদ্ধির হার কমেছে ৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। ২০২০ সালের জুলাইয়ের তুলনায় ২০২১ সালের জুলাইয়ে আমানত কমেছিল ৩৭৪ কোটি টাকা। গত জুলাইয়ে কমেছে ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। গত জুলাইয়ে ঋণের প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে ১৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। একদিকে আমানত কমেছে। অন্যদিকে ঋণের প্রবৃদ্ধির হার বাড়ছে। এ কারণে ব্যাংকে তারল্য কমছে।

অব্যাহতভাবে আমানত কমাকে ভালো চোখে দেখেন না অর্থনীতিবিদরা। তারা মনে করেন, অব্যাহতভাবে আমানত কমলে ব্যাংকে তারল্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করবে। এ বিষয়ে এখনই সতর্ক হওয়া জরুরি। অন্যথায় তারল্য সংকট বড় আকার ধারণ করবে। ডলার সংকটের শুরুর আগে থেকে ব্যাংকিং খাতের সূচকগুলো বার্তা দিচ্ছিল যে ডলারের সংকট হতে পারে। ওই সংকেত পেয়েও কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি। যে কারণে আজ সংকট ভয়ানক রূপ নিয়েছে। বর্তমানে পণ্যমূল্য বাড়ার কারণে মানুষ ব্যাংকে টাকা সঞ্চয় করতে পারছে না। বাজারেই চলে যাচ্ছে বেশির ভাগ অর্থ। এতে যেমন নতুন সঞ্চয় কমছে। তেমনি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে গ্রাহকরা দৈনন্দিন ব্যয় মেটাচ্ছে। এতে করে ব্যাংক থেকে টাকা চলে যাচ্ছে ব্যাংকের বাইরে।

editor

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *